দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৩:৫৫

ইইউর বাজারেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমছে

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় বাজারে অনেক দিন ধরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ভালো করতে পারছে না। সেই তালিকায় এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) যুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে জানুয়ারি-আগস্টে এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ কমেছে।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ইইউর কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ৯৩২ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম।

ইইউতে তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটি চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ইইউর বাজারে ১ হাজার ৫৬২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ১০ শতাংশ কম।

এই বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ইইউতে বাংলাদেশ ১ হাজার ২৯১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৩৩৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এবার রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৩ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এ বছরের জানুয়ারি–আগস্ট আট মাসে ৪৭১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ কম। গত বছর বাজারটিতে বাংলাদেশ ৭২৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল।

জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী গ্রীষ্ম মৌসুম পর্যন্ত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম। তারপর শীতে হয়তো রপ্তানি বাড়বে। তবে এখনো পোশাকের দাম নিয়ে আমাদের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কম মূল্যের কারণে অনেক ক্রয়াদেশই নেওয়া যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, গ্যাস–সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো না গেলে ক্রয়াদেশ থাকলেও রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া সুদের হার আবার বাড়ানো হয়েছে। ১৬-১৭ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে বেশি দিন টেকা যাবে না।

ইইউর বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চীন ও বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে তুরস্ক, ভারত, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া। এসব দেশের মধ্যে কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও মরক্কোর তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে, বাকি দেশগুলোর কমেছে।

এই বাজারে তৃতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক তুরস্ক চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ৬৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। তাদের রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের রপ্তানি কমেছে পৌনে ৩ শতাংশ। গত জানুয়ারি–আগস্ট সময়ে দেশটি ইইউতে ৩৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভিয়েতনাম দ্বিতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হলেও ইইউতে পঞ্চম। এ বছরের প্রথম আট মাসে ইইউতে ২৬৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে ভিয়েতনাম। এর পরের অবস্থানে থাকা কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে। তারা রপ্তানি করেছে ২৫১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুযায়ী, ইইউর বাজারে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে পাকিস্তান ২৪৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। মরক্কোর রপ্তানি বেড়েছে ৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশটি ২০১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।

এ ছাড়া ইইউর বাজারে গত জানুয়ারি–আগস্ট সময়ে শ্রীলঙ্কা ৯১ কোটি ও ইন্দোনেশিয়া ৬৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শ্রীলঙ্কার পোশাক রপ্তানি দেড় শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট