দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ১০:৩৩

অনুমতি ছিল ২৪ লাখের, ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ কেজি

ইলিশ মাছ। ফাইল ছবি

দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এ বছর ২৪ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এ অনুমতির মেয়াদ ছিল গত শনিবার পর্যন্ত। এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রপ্তানি হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ ইলিশ, যা সরকারি অনুমতির এক–চতুর্থাংশের কম।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের রোববার পর্যন্ত রপ্তানির তথ্যে দেখা যায়, এবার ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার কেজি। যশোরের বেনাপোল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে এই ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার বা ৬৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। মোট ১৬৯টি চালানের প্রতিটির রপ্তানি মূল্য ছিল কেজিতে ১০ ডলার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার মোট ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। তবে এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, এবার ইলিশ রপ্তানি করেছে ২১টি প্রতিষ্ঠান। তার মানে অনুমতি পাওয়ার পরও ২৮টি প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে রপ্তানির অনুমতি পাওয়া ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের একটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগরের মাসুদ ফিশ প্রসেসিং অ্যান্ড আইস কমপ্লেক্স। প্রতিষ্ঠানটি এবার ৫০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল। তবে এক কেজি ইলিশও রপ্তানি করতে পারেনি।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ হোসেন আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুমতি পাওয়ার পর কেজিপ্রতি ইলিশ ১০ থেকে ১৮ ডলারে বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলাম ভারতের ক্রেতাদের। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই রপ্তানিও সম্ভব হয়নি।’

এদিকে, রপ্তানির অনুমতি যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই নির্ধারিত পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি করতে পারেননি। এ রকমই একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের প্যাসিফিক সী ফুডস। প্রতিষ্ঠানটি ৫০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রপ্তানি করেছে সাড়ে ১৩ হাজার কেজি।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দোদুল কুমার দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, এবার ইলিশ আহরণ ছিল কম। দাম বেশি। এ কারণেই অনুমতি পাওয়ার পরও রপ্তানি করতে পারিনি।’

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানির অনুমতি পাওয়া ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ হাজার কেজি করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ৫টি প্রতিষ্ঠান ৫০ হাজার কেজি করে ইলিশ রপ্তানি করতে পেরেছে। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো খুলনার বিশ্বাস ইন্টারন্যাশনাল, কক্সবাজারের জেএস এন্টারপ্রাইজ, পাবনার রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, ঢাকার সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ ও স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ। বাকিরা কেউ অনুমতির পুরো পরিমাণ রপ্তানি করতে পারেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, শুধু এ বছর নয়, গত বছরও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। তবে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৮০২ টন।

বাংলাদেশের রপ্তানি নীতিতে ইলিশ শর্তসাপেক্ষে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় রয়েছে। তাই সরকারের অনুমোদন নিয়েই সুস্বাদু এ মাছ রপ্তানি করতে হয়। গত এক দশকে প্রথম ইলিশ রপ্তানি শুরু হয় ২০১৯ সালে। চলতি বছর পর্যন্ত ৬ বছরে সব মিলিয়ে ৬১ লাখ ৪৪ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬ কোটি ১ লাখ ডলার বা ৫৬৩ কোটি টাকা।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট