সেপ্টেম্বর মাসে চীনে আবারও মূল্যহ্রাস হয়েছে। দেশটিতে উৎপাদন পর্যায়ের মূল্য কমেছে। এর অর্থ হলো, দেশটিতে ভোক্তাদের চাহিদা সেভাবে বাড়ছে না। এই বাস্তবতায় চীন সরকারের ওপর আরও প্রণোদনা দেওয়ার চাপ তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে চীনের অর্থমন্ত্রী ল্যান ফোয়ান গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অর্থনীতির এই অধোগতি রুখতে চলতি বছর আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও বছরের এই শেষভাগে কবে নাগাদ এসব ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলেননি তিনি। বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী, সরকারের নতুন প্রণোদনায় চীনের এই মূল্যহ্রাসের চাপ কমবে। খবর রয়টার্সের
বিশ্বের অন্যান্য দেশ এত দিন উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করলেও চীন এত দিন মূল্যহ্রাসের সঙ্গে লড়াই করেছে।
সেপ্টেম্বর মাসে চীনে ভোক্তা মূল্যসূচক মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে, গত তিন মাসের মধ্যে যা সর্বনিম্ন। যদিও রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদেরা আশা করেছিলেন, গত মাসে দেশটির ভোক্তা মূল্যসূচক শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে। আগস্ট মাসে ভোক্তা মূল্যসূচক বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৬।
অন্যদিকে প্রোডিউসার প্রাইস ইনডেক্স (পিপিআই) বা উৎপাদন পর্যায়ের পণ্যমূল্য গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে কমেছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই সূচক কমেছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ; আগের মাসে যার হার ছিল ১ দশমিক ৮।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ায় চীনে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যহ্রাসের চাপ অনুভূত হচ্ছে। তবে গত শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী রাজস্বনীতিতে পরিবর্তনের যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সম্প্রতি চীন সরকার অর্থনীতি চাঙা করতে এবং চলতি বছর ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রায় এক লাখ কোটি ইউয়ান প্রণোদনার ঘোষণা দেয়। যদিও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এতে সাময়িক স্বস্তি মিলতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে আরও শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন; তা না হলে আগামী বছরেও এই মূল্যহ্রাসের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে সেপ্টেম্বর মাসে চীনের জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য–বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ছিল শূন্য দশমিক ১ শতাংশ, আগস্ট মাসে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকেও বোঝা যায়, মূল্যহ্রাসের চাপ বাড়ছে।
সেপ্টেম্বর মাসে চীনে খাদ্যের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৩, আগস্ট মাসে যা ছিল ২ দশমিক ৮ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে; আগস্ট মাসে যা বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ২।