চিনির বাজার দর সহনীয় ও স্থিতিশীল রাখতে কর ছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটি জানিয়েছে, অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনির ওপর বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এর ফলে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি অপরিশোধিত চিনির শুল্ক কর ১১ দশমিক ১৮ টাকা এবং পরিশোধিত চিনির শুল্ক কর ১৪ দশমিক ২৬ টাকা কমবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টাকার অবমূল্যায়ন, সাম্প্রতিক ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে শিশু খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এনবিআর কর ছাড়ের মাধ্যমে চিনির বাজার দর সহনীয় ও স্থিতিশীল রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে চিনির দাম শুল্ক হ্রাসের সমপরিমাণ কমে আসবে বলে এনবিআর মনে করছে। এ ছাড়া শুল্ক কর হ্রাসের ফলে অবৈধ পথে চিনির চোরাচালান নিরুৎসাহিত হবে এবং বৈধ উপায়ে আমদানি বাড়বে বলে শুল্ক কর আদায় বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে এনবিআর।
রোজার আগে দেশের বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে আজ এই শুল্ক চাড়ের ঘোষণা দিল এনবিআর।
বর্তমানে প্রতি টন চিনিতে তিন হাজার টাকা শুল্ক দিতে হয়। এ ছাড়া ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৭ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়। ফলে এক কেজি চিনিতে মোট ৪৩ টাকা কর দিতে হতো ভোক্তাদের। এই বাস্তবতায় চিনির নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হলো। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ১৫ লাখ ২৮ হাজার টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে।
সুপারিশে ট্যারিফ কমিশন বলেছিল, দুই বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম অনেকটা বেড়েছে। গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির মূল্য প্রতি টনে ৩৯৪ থেকে বেড়ে ৪৭৬ ডলার হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে রোজার মাসে স্থানীয় বাজারে চিনির দাম সহনীয় রাখতে এখনই নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমানো দরকার।