বিভিন্ন কারণে ব্যাংক দুর্বল হয়েছে। কিছু ভালো ব্যাংক রাজনৈতিক কারণে দুর্বল হয়েছে। আবার কিছু ব্যাংকের উদ্দেশ্য ভালো ছিল, কিন্তু নানা কারণে দুর্বল হয়ে গেছে। তাই ব্যাংকগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই-বাছাই করে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। একটু সহায়তা দিলে কিছু ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে। সে জন্য ব্যাংক খাত সংস্কারে সময়ক্ষেপণ করা উচিত হবে না। ব্যাংক খাতের যে ক্ষতি হয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর।
সাত বছর আগে ব্যাংক খাত যে অবস্থায় দেখেছি, সাত বছর পর এসে দেখি সেই অবস্থায় নেই। সুশাসনের অভাবে ব্যাংক খাতে ‘ভয়ংকর নভেম্বরে’র মতো ঘটনা ঘটেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যাংক খাতে এমন পরিস্থিতি আর কখনো সৃষ্টি হয়নি।
ব্যাংক চলেছে মুদিদোকানের মতো। অতিরিক্ত জনবল ছিল কিছু ব্যাংকে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের কিছু শাখায় অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা সকাল নয়টায় আসতেন। অতিরিক্ত এই লোকবলের কারণে ব্যাংকের গ্রাহকেরা আসতে পারতেন না। সে জন্য তাঁদের (বাড়তি লোকবলকে) বিকেল পাঁচটায় আসতে বলা হয়, যাতে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখা যায়। আমি দায়িত্বে আসার পর নতুন করে চার হাজার ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। এত দিন বিশেষ ব্যক্তির কারণে এই ব্যাংকের ‘সুনাম’ ছিল।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সাহসী সিদ্ধান্তগুলোতে আশ্বস্ত হচ্ছি।
ইসলামী ব্যাংকে নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর চাকরি হয় না, এমন আলোচনা হয়। আমি যখন ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলাম, তখন ৫০০-এর মতো নারী কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। সংখ্যালঘু নিয়োগে তৎকালীন পর্ষদে জোরালো যুক্তি দিয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তবায়ন করে যেতে পারিনি। ইসলামী ব্যাংকিংয়েও সংখ্যালঘু কর্মী থাকা উচিত। নিয়োগ হওয়া উচিত যোগ্যতার ভিত্তিতে। অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিং করে এমন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুসলিম নন। তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যোগ্যতার ভিত্তিতে।
ইসলামী ব্যাংকের শাখা পর্যায়ে অনেক স্বাধীন। আমি যখন এমডির দায়িত্বে ছিলাম, তখন পর্ষদ নিয়ন্ত্রণ করিনি।
আবদুল মান্নান, চেয়ারম্যান, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক