বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কমার কোনো খবর নেই। উল্টো বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে চড়া রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও। তবে পেঁয়াজ ও আলুর দাম আগের তুলনায় সামান্য কমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাজীপাড়া, তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামার নষ্ট হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে। আবার ভারত থেকে সম্প্রতি যে ডিম আমদানি হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় সামান্য। ফলে সরবরাহ বৃদ্ধি না পাওয়ায় দাম কমছে না।
অবশ্য কাপ্তানবাজার বা কারওয়ান বাজারের মতো পাইকারি বাজারে গতকাল ১৭০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৭০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ১০ টাকা কম ছিল।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে তুলনায় গতকাল মুরগির দাম আরও কিছুটা বাড়তি ছিল। গতকাল ঢাকার ছয়টি বাজারে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে কোনো বাজারেই ১৮০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা যায়নি। আর কোনো কোনো পাড়া-মহল্লায় দাম আরও কিছুটা বেশি ছিল।
অবশ্য কাপ্তানবাজার বা কারওয়ান বাজারের মতো পাইকারি বাজারে গতকাল ১৭০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৭০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ১০ টাকা কম ছিল।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামার নষ্ট হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে। আবার ভারত থেকে সম্প্রতি যে ডিম আমদানি হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় সামান্য।
আমদানিতেও কমেনি ডিমের দাম
ঢাকার বিভিন্ন বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৬০ টাকা ও সাদা ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাড়া-মহল্লার দোকানে দাম আরও পাঁচ টাকা বেশি ছিল। খুচরা বিক্রেতারা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরেই ঢাকার বাজারে ডিমের দাম চড়া রয়েছে; ডজন বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। এর আগে ডজন ১৫০ টাকার নিচে ছিল।
দেশে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর রোববার সন্ধ্যায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮০০টি ডিম বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে এসব ডিম শুধু কিশোরগঞ্জ এলাকায় বিক্রি হয়েছে। ফলে ঢাকার কোনো বাজারে আমদানি করা ডিম বিক্রি হতে দেখা যায়নি; ডিমের দামও কমেনি।
এদিকে সরকার বিদেশ থেকে ডিম আমদানি বন্ধ না করলে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। তবে আমদানিকারকদের দাবি, যে ডিম আমদানি হয়, তা মোট চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এতে দেশের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম আগের সপ্তাহের দামে অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০-৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ইলিশ মাছের কেজি ছিল ১৫০০-১৮০০ টাকার মধ্যে।
পেঁয়াজ-আলুর দাম কমেছে
বাজারে দেশি পেঁয়াজ ও আলুর দাম আগের তুলনায় কমেছে। গতকাল বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই দাম আগের সপ্তাহে ৫-১০ টাকা বেশি ছিল। কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার মো. জামাল হাওলাদার জানান, বর্তমানে মিসর, পাকিস্তান ও ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দামও কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকায়।
অন্যদিকে তিন সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। গতকাল বাজার ঘুরে সেই দাম অপরিবর্তিত অবস্থায় দেখা গেছে। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন প্রকার মাছের দাম আগের সপ্তাহের দামে অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০-৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ইলিশ মাছের কেজি ছিল ১৫০০-১৮০০ টাকার মধ্যে।
আমরা ভালো মাছ বা মাংস সেভাবে কেনার সুযোগ পাই না। সে জায়গায় ব্রয়লার মুরগি আর ডিমই ভরসা। কিন্তু এগুলোর দাম অনেক দিন ধরেই বেশি। এটি কমানো গেলে তা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হতো
গতকাল কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০-২০০ টাকায়। অন্যদিকে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-১২০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০ টাকা এবং ঢ্যাঁড়স, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, লাউ, পটোল ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে সরবরাহ কম থাকায় ধনেপাতার কেজি ১০০ টাকার মতো বেড়ে ৩০০-৪০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
রাজধানীর তালতলা বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো মাছ বা মাংস সেভাবে কেনার সুযোগ পাই না। সে জায়গায় ব্রয়লার মুরগি আর ডিমই ভরসা। কিন্তু এগুলোর দাম অনেক দিন ধরেই বেশি। এটি কমানো গেলে তা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হতো।’
প্রতি কেজি বেগুন ৭০-১২০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০ টাকা এবং ঢ্যাঁড়স, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা, লাউ, পটোল ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে।