নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হলেও, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন এর বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের জুলাই থেকে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। তবে এটি তৈরির কাজ গত সরকারের নির্বাহী ইশতেহারের বাস্তবায়নের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত ছিল, যা বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ কারণে পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা অন্ধকারে রয়েছে। জিইডির সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহম্মদ জানিয়েছেন, পরিকল্পনার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, তবে এটি বন্ধ হবে নাকি কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন হবে তা নিয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তিনি বলেন, এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বাস্তবায়নে কাজ করার নির্দেশনা রয়েছে এবং পরবর্তীতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ আগের আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছিল। তবে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অব্যাহত রাখবে কি না, অথবা অন্য কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি। এটি পুনরায় দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) বা স্বল্প মেয়াদী এক বছরের পরিকল্পনায় পরিবর্তিত হতে পারে।
নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মূলত ১১টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, যেমন- জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসা, এবং বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ।
বর্তমানে, পরিকল্পনাটি তৈরির কাজ স্থগিত রয়েছে এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে সম্মানি পরিশোধের জটিলতা এড়ানোর জন্য কাজের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রেখেছে। বর্তমানে টেকনিক্যাল পেপার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং প্রায় ২৫-৩০টি ব্যাকগ্রাউন্ড পেপারও প্রস্তুত রয়েছে। নতুন পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য ছিল মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, দারিদ্র্য কমানো, এবং বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।