অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম মাস আগস্টে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, যদিও তা এখনও দুই অঙ্কের ঘরেই রয়ে গেছে। আগস্টে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা জুলাই মাসে ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মাসিক ভিত্তিতে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) বিভিন্ন পণ্য ও সেবার খরচের হিসাব দিয়ে নির্ধারিত হয়, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শতকরা হারে পরিবর্তন দেখায়। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির তথ্যও ১২ মাসের গড় হিসাব করে নির্ধারিত হয়।
গত কয়েক বছর ধরেই দেশের মূল্যস্ফীতি উচ্চ অবস্থায় রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন, কারফিউ ও সহিংসতার কারণে পণ্য ও সেবার সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার ফলে জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যায়। জুলাইয়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিল, যা এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর আগস্টে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও দুই মাস ধরেই তা দুই অঙ্কের ঘরেই রয়েছে। তবে, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে, যা জুলাইয়ে ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি আগস্টে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
গ্রাম ও শহর দুই জায়গাতেই মূল্যস্ফীতি কমেছে; গ্রামে এটি ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং শহরে প্রায় ১০ শতাংশ।
গত কয়েক অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা সম্ভব হয়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য ছিল, কিন্তু তা দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বাজেট আলোচনা ও অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না থাকায় এটি বাজেটের বড় দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।