বাজারে বেড়ে চলছে চালের দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছুদিনের জন্য কমলেও এখন আবার চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, সরকার পতনের পর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সিন্ডিকেট এবং চাঁদাবাজরা আবার সক্রিয় হয়েছে। এ কারণে এক ব্যবসায়ী নেতা মন্তব্য করেছেন, “আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস।”
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, বর্তমানে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, তবে এটা শুধু ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত পরিবর্তনের ফল।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে মোটা চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে ৫২ থেকে ৬০ টাকায় পৌঁছেছে। মিনিকেট চালের দামও একই পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান বলেন, চালের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বাজারে ধানের অভাব ও বন্যার কথা উল্লেখ করলেও আসল কারণ হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের চাতাল মালিকরা ধান স্টক করে রেখে দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে। তিনি বলেন, “সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের সময়ে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, কিন্তু এখন সেই সিন্ডিকেট নতুন চেহারায় ফিরে এসেছে। তারা আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস।”
ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা হয়ে গেছে এবং সোনালি মুরগির দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা হয়েছে। বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম ১৫০ টাকা হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগি ও ডিমের দাম ফিডের দাম কম না হওয়ার কারণে বাড়ছে। পোল্ট্রি ফিডের দাম কমেনি এবং উচ্চমূল্যের ফিডের জন্য সরকারের নীতি ও সিন্ডিকেট দায়ী।
চাষের মাছের দাম স্থিতিশীল থাকলেও ইলিশের দাম এখনও চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায় এবং ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলু ও পেঁয়াজের দাম দীর্ঘদিন ধরেই বেশি। আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং পেঁয়াজের শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে, কিন্তু এর পরও দাম কমেনি। বর্তমানে আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, সরকার পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছিল কিন্তু এখন আবার দাম বাড়ছে। তিনি সরকারের প্রতি বাজার মনিটরিংয়ে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।