দ্যা নিউ ভিশন

মার্চ ১০, ২০২৫ ০৩:৫৮

বিদেশি ফলের দাম বেশি, ইফতারে বেড়েছে দেশি ফলের চাহিদা

বিদেশি ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে দেশি ফলের চাহিদা

সারা বছর সব ধরনের ফলের চাহিদা থাকলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে দেশি-বিদেশি রসালো ফলের। সম্প্রতি বিদেশি ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ। তাই আপেল, নাশপাতি, আঙুর, কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি ও আনারের মতো বিদেশি ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এই বাস্তবতায় পরিবারের জন্য যাঁরা ফল কিনতেন, তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন খাদ্যতালিকা থেকে ফলের মতো পুষ্টিকর পণ্যটি বাদ দিতে। এই সুযোগে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে দেশি ফলের কেন্দ্রগুলোতে। দামও কিছুটা হাতের নাগালে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি ফলের চড়া দামের সুযোগে বেড়েছে কিছু দেশি ফলের দামও। আকারভেদে আনারস ১০০ টাকা জোড়া বিক্রি হলেও রোজার আগে তা ছিল ৮০ টাকা জোড়া। বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, তরমুজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও পেঁপে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সফেদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৬০, বাঙ্গি আকারভেদে প্রতি পিস ১০০ থেকে ৩০০, বেল ৮০ থেকে ১২০ প্রতি পিস, কলা ৮০ থেকে ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।

অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২২০ টাকার আপেল এখন ৪০০ টাকা কেজি। তাই এখন যদি বিদেশি ফল কিনতে যাই, তাহলে সারা মাসের ফলের ব্যয় চলে যাবে সাত দিনে। আর যাঁদের পরিবারের সদস্য আমার মতন ১১ জনের, তাঁদের বিদেশি ফলের দিকে তাকানো যেন মুশকিল।’ এই পরিস্থিতিতে তিনি দুই কেজি বড়ই কিনলেন ১২০ টাকা দিয়ে, ঘুরে ঘুরে বিদেশি ফল দেখলেও কিনলেন না কোনোটাই। তারপর ৯০ টাকা দরে ২ কেজি পেয়ারা আর ৪০ টাকা দরে ৪টি আনারস কিনে বাড়ি ফিরলেন নুরুল হক।

আরেক ক্রেতা সরকারি চাকরিজীবী রিপন আহমেদ বলেন, ‘দামের কারণে বিদেশি ফল কেনা যাচ্ছে না, তাই পরিবারের সদস্যরা আগে দেশি ফল না খেলেও এখন খাচ্ছে।’

কারওয়ান বাজারের দেশি ফলের বিক্রেতা ফাহিম আহমেদ কেশর আলু বিক্রি করছেন ৮০ টাকা কেজি দরে। ১ দিনে বিক্রি করেন ৪০ কেজির মতন। লাভ সীমিত হলেও ব্যবসা ভালো যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বিদেশি ফলের বিক্রেতা মোহাম্মদ সাগর বলেন, বিদেশি ফলের দাম বাড়াতে বিক্রি প্রথম রোজা থেকে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে দিনে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি ফল বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ কেজি। এর জন্য বিক্রেতারা দুষছেন ডলার–সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও অতিরিক্ত শুল্ক আদায়ের মতো সরকারি সিদ্ধান্তকে।

তবে বিদেশি ফলের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে কেবল আঙুরের দাম। গতকালও ফলটি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগেও যা ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় কেনা যেত।

কালো আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। গতকাল বাজারে এখন ১ কেজি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, আপেল ২৮০ থেকে ৩৪০, নাশপাতি ৩০০ থেকে ৩২০, স্ট্রবেরি ৪০০ থেকে ৫০০, আনার প্রকারভেদে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।

তবে রমজানে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে সব ধরনের ফলের। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের ফলের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় সব ধরনের ফলের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের দাবি, প্রতিবছর রোজা এলেই প্রায় সব ধরনের ফলের দাম বাড়ে। তাই সরকারের সঠিক হস্তক্ষেপের দাবি তাঁদের।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

খালেদা জিয়া হেঁটে জেলে গেছেন, স্বৈরাচার নির্যাতন করে হুইলচেয়ারে বসিয়ে দিয়েছে: ইকবাল হাসান মাহমুদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু) বলেছেন, ফ্যাসিস্ট