উপজেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের করজালের আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন জেলা প্রশাসকেরা। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এমন ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ওই সব এলাকায় শিগগিরই কর পরিদর্শক পাঠিয়ে তাঁদের করের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিসিরা বলেছেন, গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যাঁরা ভালো আয় করেন। কিন্তু কর ও ভ্যাট দেন না। তাঁদের করজালে আনার সুপারিশ করেছেন জেলা প্রশাসকেরা। তাঁদের এমন ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে বলেছি। এনবিআর বলেছে, শিগগিরই সেখানে কর পরিদর্শক পাঠাবে।’
করজাল বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘রাজস্ব আদায় বাড়াতে যেন করের হার না বাড়াই।’ তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকেরা তাঁদের ফির টাকা নগদে নেন। তাঁরা যেন রসিদ দেন, সেই ব্যবস্থা করা উচিত। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে চিকিৎসকের ফি দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, গ্রাম এলাকায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়ানোর যোগাযোগ তৈরি করতে হবে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘চীনের প্রত্যন্ত গ্রামে বানানো জিনিসপত্র ওয়ালমার্টে বিক্রি হচ্ছে। আমি একবার ফিলিপাইনের এক গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানকার এক নারী উদ্যোক্তা জানান, তিনি সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তাঁর ক্রেতার সঙ্গে বৈঠক করতে।’
বর্তমানে ১ কোটি ১১ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৪০ লাখের মতো টিআইএনধারী রিটার্ন দেন। বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত ৮ শতাংশের কম। বিশ্বের সবচেয়ে কম জিডিপি অনুপাতের দেশগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও করজালে নেই। এ দেশে কর ফাঁকি বা কর এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) করজাল বাড়ানোর চেয়ে করহার বাড়িয়ে আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। আবার যাঁরা নিয়মিত কর দেন, তাঁদের ওপরই বেশি চাপাচাপি করেন কর কর্মকর্তারা।