দ্যা নিউ ভিশন

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫ ০২:০৭

এবার বিমা দিবস পালন করবে না সরকার, নেপথ্য কারণ কী

বিমা

পাঁচ বছর ধরে জাতীয় বিমা দিবস পালিত হয়ে এলেও এবার তা হচ্ছে না। জাতীয় বিমা দিবস যৌথভাবে আয়োজন করে থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ দিবসটি পালন সামনে রেখে দুই মাস আগে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করার চিঠি দিয়েছিল বিমা খাতের মালিকপক্ষের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বিআইএ)। পরে বৈঠকটি আর হয়নি। বিমা দিবসের আর বাকি আছে ১৫ দিন। অথচ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও আইডিআরএ এ বিষয়ে এখনো চুপচাপ।

২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক পরিপত্র জারি করে ১ মার্চ জাতীয় বিমা দিবস উদ্‌যাপনের ঘোষণা দেয়। ওই পরিপত্রে দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবেও ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে ২০২৩ সালে দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিতেও উন্নীত করা হয়।

কেন পালিত হবে না এবারের জাতীয় বিমা দিবস—এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আবদুর রশীদ গতকাল শনিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সব জাতীয় দিবস এবার পালন করা হবে না। যেগুলো না করলেই নয়, শুধু সেগুলো পালন করা হবে। পালন না করার সিদ্ধান্তের কথা আয়োজকদের জানানো হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

গত ২০২০, ২০২১, ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের ১ মার্চ জাতীয় বিমা দিবস পালিত হয়, প্রতিটি আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগ দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এ তারিখটিকে বিবেচনায় রেখেই আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় বিমা দিবস ঘোষণার পরিপত্র জারি করেছিল।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার জাতীয় বিমা দিবস পালন করা হচ্ছে না।’ এর বাইরে অবশ্য তিনি আর কিছু বলতে চাননি।

দেশে ৮২টি বিমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে জীবনবিমা ৩৬টি ও সাধারণ বিমা ৪৬টি। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বিমা খাতের অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ, যেখানে ভারতে ৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ। আইডিআরের তথ্যানুসারে, দেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৭১ লাখ ১০ হাজার মানুষ বিমার আওতায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসরকারি জীবনবিমা কোম্পানিগুলোর ২০২২ সালের বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৮ কোটি টাকা, আর সম্পদের পরিমাণ ৪২ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। এ ছাড়া কোম্পানিগুলোর জীবন তহবিল ২০২২ সাল শেষে ৩১ হাজার ৫৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা, আর প্রিমিয়াম আয় ১০ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। বেসরকারি নন–লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় ৪ হাজার ১৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৭৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।

বিমা দিবসের আয়োজন না থাকলেও মালিকপক্ষের সমিতি বিআইএ এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) কেউই এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে আইডিআরএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মনে করেন, বিমা দিবস পালন করা উচিত। কারণ, বিমা খাতে সচেতনতার ঘাটতি আছে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে অনেকে উজ্জীবিত হন। কোম্পানিগুলো নিজেদের মতো করে সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে যেতে পারেন। ১ মার্চ কোনো সমস্যা হলে প্রয়োজনে তারিখটি পাল্টানো যেতে পারে। তবু দিবসটি পালিত হওয়া দরকার।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ