দ্যা নিউ ভিশন

মাতারবাড়ী প্রকল্পের পরিচালক সরকারি জিনিসপত্র বেচে পালিয়েছেন

অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘মাতারবাড়ী প্রকল্পের পরিচালক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পালিয়ে গেছেন। যাওয়ার আগে তিনি প্রকল্পের অনেক সরকারি জিনিসপত্র বিক্রি করে দেন। তাই আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, প্রকল্প পরিচালক দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।’ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর অনেক প্রকল্প পরিচালককে পাওয়া যাচ্ছে না।

আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা আরও বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমে এসে যাচাই–বাছাই করে প্রকল্প পাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে প্রকল্পপ্রবাহ কমেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে একধরনের ধীরগতি আছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৮ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, অগ্রাধিকারমূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা যায়, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। সে অনুসারে সংশোধিত এডিপিতে ওই সব প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা স্থবিরতা আছে। মূল্যস্ফীতির হার বেশি। জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে ব্যাহত করছে। গ্রামগঞ্জের দোকানপাটে বেচাকেনা কম হচ্ছে। মানুষের আয়-ব্যয় সংকুচিত হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, নতুন বিনিয়োগ না হলে এবং এডিপি বাস্তবায়ন কমে গেলে অর্থনীতিতে মন্দাভাব সৃষ্টি হতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার কারণে বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা চলছে। যা উৎপাদিত হয়, তা–ও বজায় রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। শ্রমিকেরা দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন।

প্রকল্প খরচ সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রথম দিকে যাচাই–বাছাই করে প্রকল্প পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অতিমূল্যায়িত প্রকল্প, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রকল্প—এসব দেখা হচ্ছে। এসব করতে গিয়ে উন্নয়ন ব্যয় কম হচ্ছে।

আগামী বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়বে বলে জানান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ শুধু অবকাঠামো খাতে নয়; শিক্ষা সরঞ্জামাদি ও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করা যাবে বলে আমি মনে করি না। অতিরিক্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।’

শিক্ষার্থীরা নানা দাবিতে আন্দোলন করছেন—এমন প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য হলে তা পূরণ করা হবে। ইতিমধ্যে এমন অনেক আন্দোলন থেমে গেছে। অন্যায্য দাবি হলে মানা হবে না। রেলযাত্রীদের আক্রমণ করলে জনমত বিপক্ষে চলে যায়। সেদিক থেকে আমরা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি।’

একনেকে পাস পাঁচ প্রকল্প

আজকের একনেক সভায় পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো হলো পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন এবং ক্ষমতাবর্ধন; ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ইউনিভার্সিটিজ ইন বাংলাদেশ টু প্রমোট ইয়ুথ এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ; মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা; চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প এবং ইমার্জেন্সি মাল্টিসেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্প।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ