মানব দেহের শারীরিক যোগ্যতা সুস্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি। এটি নির্ভর করে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সঠিক কার্যক্রমের ওপর। আমাদের দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং শারীরিক যোগ্যতা বজায় থাকে। তবে যদি কোনো অঙ্গ, যেমন মস্তিষ্ক, লিভার, মাংসপেশি, কিডনি, বা পরিপাকতন্ত্র, ঠিকমতো কাজ না করে, তাহলে শারীরিক সক্ষমতা কমে যায়। প্রতিটি অঙ্গের সঠিক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি।
খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি লাভ করে, যা পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে হজম হয়ে রক্তে শোষিত হয়। হজম না হওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় অংশ মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পুষ্টিহীনতার কারণে শারীরিক যোগ্যতা হ্রাস পায়।
সুষম খাদ্য বলতে এমন সব খাবারকে বোঝায়, যাতে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, শর্করা, স্নেহজাতীয় খাদ্য, ভিটামিন, খনিজ লবণ, এবং যথাযথ পরিমাণে পানি থাকে। প্রোটিন পাওয়া যায় মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, এবং ডাল থেকে; শর্করা আসে চাল, গম, আলু থেকে; স্নেহজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত উদ্ভিজ্জ তেল, পশুর চর্বি ইত্যাদি। ভিটামিন এবং খনিজ লবণ আমরা শাকসবজি এবং ফলমূল থেকে পাই। এই ছয়টি উপাদানের যে কোনো একটি ঘাটতি হলে, তা শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ ব্যাহত করে এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অক্সিজেনও একটি অপরিহার্য উপাদান যা ফুসফুস থেকে শোষিত হয়ে রক্তে প্রবেশ করে। রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে এই অক্সিজেন ও পুষ্টি শরীরের প্রতিটি অঙ্গে পৌঁছায় এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। হার্ট রক্ত পাম্প করে সারা শরীরে এই রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করে। যদি কোনো কারণে হার্ট রক্ত পাম্প করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শরীরের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং মারাত্মক পরিণতি ঘটে।
শারীরিক যোগ্যতা বজায় রাখতে হার্টের সুস্থতা অপরিহার্য। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ নির্দিষ্ট কাজের জন্য দায়ী এবং সেগুলো সঠিকভাবে কাজ না করলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। তাই শারীরিক যোগ্যতা বজায় রাখতে সুষম খাদ্যগ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং সুস্থ জীবনযাপন অপরিহার্য।
লেখক: চিফ কনসালট্যান্ট, শমশের হার্ট কেয়ার, শ্যামলী, ঢাকা