দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ১৫:৩৮

মন খারাপ হলে কি শারীরিক অসুস্থতা বাড়ে?

জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর পর অল্প সময়ের মধ্যেই যদি কেউ মারা যান বা শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েন, অনেকেই মনে করেন, প্রিয়জনের মৃত্যুর শোক সামলাতে না পারার ফলেই এমনটা ঘটেছে। কিন্তু আসলেই কি শোকের সঙ্গে শারীরিক অবস্থার কোনো সম্পর্ক আছে? এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি পাওয়া যায়?শরীর ও মনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, যেমনটি বলা হয় “সুস্থ দেহে সুস্থ মন”। যদি দেহ সুস্থ না থাকে, মনও ভালো থাকে না, আর মন ভালো না থাকলেও শারীরিক অসুস্থতা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. হেলালউদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, মানসিক বিপর্যয়ের কারণে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগ নিয়ন্ত্রণে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

যেমন, ধরা যাক একজনের ডায়াবেটিস রয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে নিয়মিত জীবনধারা মেনে চলতে হয়—খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা এবং ওষুধ সেবন। কিন্তু যদি সে কোনো মানসিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়, তাহলে এই নিয়মভঙ্গ হতে পারে। হয়তো সে সময়মতো খাবার খেতে পারল না বা এমন কিছু খেল যা ক্ষতিকর, কিংবা ওষুধ সেবন এবং শরীরচর্চা ঠিকভাবে করতে পারল না। এর ফলে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমনকি রক্তের সুগার বিপজ্জনকভাবে নেমে যেতে পারে।

 

এ ধরনের ঘটনা শুধু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে নয়, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হাঁপানি বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। মানসিক বিপর্যয়ের সময় শারীরিক অসুস্থতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে, বিশেষত যখন স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখার প্রয়োজন হয়। মানসিক অস্থিরতা ঘুমের সমস্যা তৈরি করতে পারে, হরমোনের মাত্রা পরিবর্তিত হয়ে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

তাই, কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু বা বড় কোনো মানসিক আঘাতের পর ব্যক্তির যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব বাড়ে। প্রথম কয়েক দিন তাকে শুধু খাবার পাঠানো বা তার সঙ্গে থাকা যথেষ্ট নয়। যতক্ষণ না সে মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। যদি আগে থেকে কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে, তবে চিকিৎসার যেন ব্যত্যয় না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।

 

এমনকি যদি তার কোনো শারীরিক অসুস্থতা না থাকে, তবুও তার মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। শোক বিষণ্নতার অন্যতম উপসর্গ হতে পারে। যদিও কিছু শোক পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়, তবুও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা দরকার। যদি কোনো ব্যক্তি দীর্ঘ সময়েও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে না পারেন, তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট