সাকিব আল হাসান আপাতত বাংলাদেশে আসছেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেষ টেস্ট খেলা হচ্ছে না তাঁর। তার মানে কি ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টই সাকিবের শেষ টেস্ট হয়ে থাকবে? নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না সেটিও।
দুবাই থেকে সাকিব নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর এখন দেশে আসা হচ্ছে না। নিরাপত্তাঝুঁকির কারণেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। দুবাই থেকে তিনি আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
এর আগে গতকাল গভীর রাত থেকেই শোনা যাচ্ছিল, সাকিবের দেশে আসা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই হয়ে দেশে আসছিলেন তিনি। দুবাই থেকে তাঁর ঢাকার ফ্লাইট ছিল স্থানীয় সময় আজ বিকেলে, ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রাতে।
কিন্তু জানা গেছে, নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে ঢাকা থেকেই সাকিবকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আপাতত দেশে না আসার জন্য।
একজন ক্রিকেটার (সাকিব), তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। আসার ব্যাপারে তো আমি কোনো বাধা দেখি না।
আসিফ মাহমুদ, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা
যদিও গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ অক্টোবর শুরু প্রথম টেস্টের দল ঘোষণা করা হয়েছে তাঁকে রেখেই। নির্বাচকেরা বিসিবির সবুজসংকেত পেয়েই তাঁকে দলে রেখেছিলেন। আর বিসিবি সবুজসংকেত পেয়েছিল সরকারের কাছ থেকে। তারপরও হঠাৎ সাকিবের নিরাপত্তা কেন একটা ইস্যু হয়ে গেলে, সেটি জানা যায়নি। এ ব্যাপারে বিসিবির কাছ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা আসেনি।
গত কয়েক দিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাকিবের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছেন, দেয়াললিখন লিখেছেন। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। সাকিবকে যেন দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে না দেওয়া হয়, সে দাবি নিয়ে আজ দুপুরেও একটি পক্ষের স্মারকলিপি নিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসার কথা। তবে তার আগেই হয়তো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসে যাবে যে সাকিব দেশে আসছেন না।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অবশ্য সাকিববিরোধীদের এই আচরণকে ‘আবেগের ব্যাপার’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘একজন ক্রিকেটার (সাকিব), তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। আসার ব্যাপারে তো আমি কোনো বাধা দেখি না।’ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’
দেশের মাটিতে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলতে পারা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, সাকিবের দেশে আসা-যাওয়ায় কোনো বাধা নেই। তিনি সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
কিন্তু পরিস্থিতি হুট করেই পাল্টে গেল। আজ সকালে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানোর আগপর্যন্ত সাকিবকে দুবাইয়ে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তবে ঢাকায় আসার ফ্লাইটের আগে যেহেতু হাতে যথেষ্ট সময় ছিল, শেষ পর্যন্ত সাকিব দেশে আসার সবুজসংকেত পাবেন বলে তাঁরা আশা করছিলেন। এখন আর সেটি হচ্ছে না।