এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় কিছু বিষয়ে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল এবং পরীক্ষার্থীদের একাংশের চাপের মুখে সেই পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে। আর যেসব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া যায়নি, সেগুলোর ফলাফল এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে প্রকাশ করা হয়েছে।
অনেকে আশা করেছিলেন যে এই প্রক্রিয়ায় পাসের হার অনেক বেড়ে যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। বরং ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গড় পাসের হার গতবারের তুলনায় কমেছে। তবে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডেও একই ধরণের প্রবণতা দেখা গেছে—পাসের হার কমেছে, কিন্তু জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।
আজ মঙ্গলবার এই ভিন্ন ব্যবস্থায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। অন্যান্য সময়ে প্রধানমন্ত্রী ফল প্রকাশের উদ্বোধন করতেন, তবে এবার ফলাফল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, এবারের পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নিয়েছিলেন ১১ লাখ ৩১ হাজার ১১৮ জন পরীক্ষার্থী, যার মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৬৪৪ জন। গড় পাসের হার ৭৫.৫৬ শতাংশ, যা গতবার ছিল ৭৬.৯ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ জন শিক্ষার্থী, যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি।
পাসের হার কমে যাওয়া এবং জিপিএ-৫ বাড়ার কারণ হিসেবে তপন কুমার সরকার উল্লেখ করেন, যেসব বিষয়ে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল, সেগুলোর প্রভাব পাসের হারের ওপর তেমন পড়েনি। ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, যা পাসের হারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে, জিপিএ-৫ বাড়ার পেছনে বিষয় ম্যাপিং প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়া শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিকে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়লে, এসএসসির বিজ্ঞানের নম্বর এইচএসসির নৈর্বাচনিক বিষয়ের নম্বর হিসেবে যোগ হয়েছে, যা জিপিএ-৫ বাড়িয়েছে।
এবারের বিষয় ম্যাপিং প্রক্রিয়াটি নতুন নয়। আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার সময় কম বিষয়ের পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।