দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৬:২২

বাঙালির রসনায় দুর্গা উৎসব

### দুর্গাপূজায় বাঙালির রসনা

 

দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব। এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে নানা ধরনের খাবার দাবারের আয়োজন, যা বাড়ি থেকে শুরু করে পূজা মণ্ডপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। দুর্গাপূজা মানেই যেন এক বিশেষ খাদ্য উৎসব; একের পর এক মুখরোচক পদ প্রস্তুত হয়, যা অন্য সময়ের তুলনায় একদমই ভিন্ন। দুর্গাপূজার সময় খাবারের তালিকায় থাকে নানা ভিন্নতা। সাধারণ খাবারের পরিবর্তে বিশেষ ধরনের নিরামিষ খাবারকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়, যদিও নবমী পর্যন্ত নিরামিষ খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। এ উপলক্ষে খাবারের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়, যাতে প্রতিদিনের খাবার পরিকল্পনা থাকে। পূজায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে মিষ্টি জাতীয় খাবারের।

 

**পূজার দিনের খাবার পরিকল্পনা:**

 

সকালের নাস্তার জন্য দই, চিড়া, মুড়ি, খই এবং নারিকেলের সঙ্গে একটি খাবার তৈরি করা যেতে পারে। এছাড়া লুচি, বুটের ডাল, পাঁচ তরকারি এবং হালুয়ার মতো পদগুলোও বেশ জনপ্রিয়। অনেকেই সকালের প্রসাদ গ্রহণ করতে মণ্ডপে যান, সেক্ষেত্রে তাদের নাস্তার পরিকল্পনা আলাদা হয়। এই সময়ে বিভিন্ন ফল, পাঁচ মিষ্টি এবং সন্দেশ খাওয়ার প্রচলন থাকে।

 

দুপুরের ভোজে থাকে নানা আয়োজন। সবজি পোলাও ও লাভরা খিচুড়ি দুর্গাপূজার অন্যতম জনপ্রিয় মধ্যাহ্ন ভোজন। বাসন্তি পোলাওয়ের সঙ্গে সয়াবিনের তরকারি বেশ জনপ্রিয়। মিষ্টি হিসেবে খিরসা ও পায়েশের ব্যবস্থা করা হয়। দুর্গাপূজার মধ্যাহ্ন ভোজকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং সাধারণত সকালে খাবারের প্রস্তুতি শুরু হয়।

 

বিকালের দিকে ঝাল ঝাল নানা ধরনের খাবারের জন্য মন আকৃষ্ট হয়। মুচমুচে ও কুড়মুড়ে খাবার বিকালের নাস্তায় বেশ জনপ্রিয়। বন্ধুবান্ধব মিলে ফুচকা, ঝালমুড়ি, পুরি, সিঙ্গারা ও ভাজা জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে।

 

রাতের খাবার হালকা হওয়াই ভালো। পূজার সময়ে রাতের খাবার সাধারণত বাইরে খাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, বিশেষ করে নবমীর রাত থেকে বিরিয়ানি খাওয়ার প্রচলন। মণ্ডপের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের মিঠাই, মিষ্টি এবং আইসক্রিমের স্টলও দেখা যায়, যা ঘুরতে গিয়ে মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

 

**দশমীর বিশেষ খাবার:**

 

দশমীর দিন ইলিশ মাছ খাওয়ার একটি প্রথা রয়েছে, তাই বেশিরভাগ পরিবারে ইলিশ মাছ রান্না করা হয়। বিজয়ের এই দিনটি মিষ্টি মুখ দিয়ে উদযাপন করা হয়, বিশেষ করে লাড্ডুর মাধ্যমে। মতিচুর, ঘি ও তেলের লাড্ডু, বাদামের লাড্ডু, তিলের লাড্ডুর সমাহারও দেখা যায়।

 

**পরিবেশন ও সাজসজ্জা:**

 

এসব সুস্বাদু খাবার শুধু তৈরি করলেই হবে না, বরং সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। ডাইনিং টেবিলকে পরিষ্কার ও রঙিন করে তুলতে হবে। খাবার পরিবেশনা মানে শুধু স্বাদ নয়, পরিবেশনার উপরও নির্ভর করে খাবারের রুচি। পূজার সময় ঘরে রঙিন আমেজ থাকতে হবে, এবং কাঁচা ফুল দিয়ে টেবিল সাজানোর বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

 

তামা, স্টিল ও কাশার বাসন ব্যবহার করে খাবার পরিবেশন করলে পূজার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। হিন্দু পরিবারগুলোতে এই ধরনের বাসনের ব্যবহার বহু পুরাতন, যা খাবারের পরিবেশনায় এক বিশেষ আবহ তৈরি করে।

 

এভাবে দুর্গাপূজার সময় বাঙালির রসনায় ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য তুলে ধরে এক আনন্দময় পরিবেশ তৈরি হয়।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট