দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৮:০৬

প্রকাশ্যে এসেই তৎপর সুব্রত বাইন, ‘পিচ্চি হেলাল’, ‘কিলার আব্বাস’সহ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা

ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল,সুব্রত বাইন,আব্বাস আলী ওরফে কিলার আব্বাস ও সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন

কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছেন। একইভাবে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছেন। অপরাধের পুরোনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেওয়ার পাশাপাশি চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকায় গত মাসে জোড়া খুনের একটি ঘটনায়ও একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এসেছে।

সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। একটি দোকান দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। পরে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকে কথা বলেছেন। এ নিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

শুধু সুব্রত বাইন নয়, মোহাম্মদপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালসহ অনেকেরই এ ধরনের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রায় দুই যুগ পর জামিনে বের হওয়া পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর রায়েরবাজারে সাদেক খান আড়তের সামনে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এলাকার ‘দখল’ নিতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের বিরোধ থেকে জোড়া খুনের ওই ঘটনা ঘটেছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে যাঁরা কারাগারের বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের ওপর সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি রাখা দরকার। এ কাজ ঠিকভাবে করতে না পারলে সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে।

নাইম আহমেদ সাবেক কমিশনার, ডিএমপি

ঘটনার পর পিচ্চি হেলালকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুরের খুনের ঘটনায় পিচ্চি হেলাল গ্রেপ্তার না হলেও দু-তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্য শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ওপরও পুলিশের নজরদারি রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী হোক বা যে–ই হোক, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্তত ছয়জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই এক থেকে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে ছিলেন। জামিনে মুক্ত হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘কিলার আব্বাস’ হিসেবে পরিচিত মিরপুরের আব্বাস আলী, তেজগাঁওয়ের শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগ এলাকার সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন। এ ছাড়া ঢাকার অপরাধজগতের আরও দুই নাম খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসুও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

তাঁদের বাইরে বিদেশে থাকা কোনো কোনো সন্ত্রাসী আবার দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন বলেও আলোচনা আছে। এ ছাড়া আত্মগোপনে থাকা কেউ কেউ প্রকাশ্যে এসেছেন। এমনই একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে মনে করা হতো, তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে সেখানেই আছেন। তবে ঢাকার অপরাধজগতের একটি সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইন সরকার পতনের আগে থেকেই দেশে একটি ‘গোপন’ জায়গায় ছিলেন। সরকার পতনের পর সেখান থেকে তিনি ছাড়া পান।

জামিনে মুক্ত হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘কিলার আব্বাস’ হিসেবে পরিচিত মিরপুরের আব্বাস আলী, তেজগাঁওয়ের শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগ এলাকার সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন। এ ছাড়া ঢাকার অপরাধজগতের আরও দুই নাম খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসুও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর যে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার ঘোষণা করেছিল, তাঁদের অন্যতম ছিলেন সুব্রত বাইন। তাঁর নামে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। সেখানে তাঁর বয়স দেখানো হয়েছে ৫৫ বছর। তাঁকে ধরিয়ে দিতে তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে মতিঝিল, মগবাজার, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় এ প্রবণতা বেশি। ডিস-ইন্টারনেট ব্যবসা, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন, ফুটপাত, বাজার, ঝুট ব্যবসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও নির্মাণকাজ থেকে চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের মতো বিভিন্ন খাত থেকে চাঁদা তোলা ও আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন তাঁরা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। আবার ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রও তাঁদের কাছে যেতে পারে।

নিজের গবেষণার জন্য রাজধানীর অপরাধজগৎ ও সন্ত্রাসী তৎপরতার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাসীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন, এমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। পুরোনো সহযোগীদের সংগঠিত করে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহের জন্য এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার ও ভয়ের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন তাঁরা।

তৌহিদুল হক মনে করেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকে পরিস্থিতি বুঝে এখন রাজনৈতিকভাবে পরিচিতি পাওয়ার চেষ্টা করেন। এ কারণে রাজনৈতিক দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাঁদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে।

ডিস-ইন্টারনেট ব্যবসা, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন, ফুটপাত, বাজার, ঝুট ব্যবসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও নির্মাণকাজ থেকে চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের মতো বিভিন্ন খাত থেকে চাঁদা তোলা ও আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন তাঁরা।

সুব্রত বাইনকে যেভাবে দেখা গেল

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, মূলত নব্বইয়ের দশকে মগবাজারের বিশাল সেন্টার ঘিরেই উত্থান হয় সুব্রত বাইনের। তিনি এই বিপণিবিতানের কাছে চাংপাই নামে একটি রেস্টুরেন্টের কর্মচারী ছিলেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে অপরাধজগতের সঙ্গে জড়িয়ে যান। পরে বিশাল সেন্টারই হয়ে ওঠে তাঁর কর্মকাণ্ড পরিচালনার কেন্দ্র। এ জন্য অনেকে তাঁকে ‘বিশালের সুব্রত’ নামেও চেনেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর হঠাৎই বিশাল সেন্টারে আসেন সুব্রত বাইন। তবে সেখানকার পুরোনো ব্যবসায়ীরা তাঁকে প্রথমে চিনতে পারেননি। মুখে দাড়ি রেখেছেন, চেহারায়ও বেশ পরিবর্তন এসেছে। তখন মুরাদ নামের এক ব্যক্তি তাঁকে সুব্রত বাইন বলে পরিচয় করিয়ে দেন। হঠাৎ সুব্রত বাইনের আগমনের খবরে বিশাল সেন্টারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, এই মার্কেট থেকে সুব্রতকে একসময় প্রতি বর্গফুটে দুই টাকা করে দিতে হতো। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে এসে ওই টাকা দেওয়া ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। সুব্রত বাইনের আগমনের পর নতুন করে আবার চাঁদা দিতে হতে পারে—ব্যবসায়ীদের মধ্যে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সুব্রত বাইন হঠাৎ কেন প্রকাশ্যে এলেন, এ বিষয়ে বিশাল সেন্টার ভবন পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশাল সেন্টার তাদের বন্ধকি সম্পত্তি। মাসুদ নামের এক ব্যক্তি সেখানকার একটি দোকানে তালা ঝুলিয়ে সেটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ায় সুব্রত বাইনকে নিয়ে আসা হয়েছিল।

হঠাৎ সুব্রত বাইনের আগমনের খবরে বিশাল সেন্টারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, এই মার্কেট থেকে সুব্রতকে একসময় প্রতি বর্গফুটে দুই টাকা করে দিতে হতো। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে এসে ওই টাকা দেওয়া ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। সুব্রত বাইনের আগমনের পর নতুন করে আবার চাঁদা দিতে হতে পারে—ব্যবসায়ীদের মধ্যে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতার বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা জামিনে বের হয়েছেন, তাঁদের ওপর নজরদারি রয়েছে। আর আত্মগোপনে থেকে যাঁরা প্রকাশ্যে এসেছেন এবং অপরাধে জড়াচ্ছেন অথবা ভীতিকর পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন, তাঁদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধজগতের আলোচিত নাম ছিল সুব্রত বাইন। আধিপত্য বিস্তার করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে তাঁর নাম আসা ছিল তখনকার নিয়মিত ঘটনা। এসব কাজ করতে গিয়ে অসংখ্য খুন-জখমের ঘটনাও ঘটেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিটি করপোরশেনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনেক ঠিকাদারের কাছে সুব্রত বাইনের প্রকাশ্যে আসার কথা জানানো হয়েছে। ঠিকাদারি কাজ করার আগে যেন তাঁর বিষয়টি ‘খেয়াল’ রাখা হয়, এমন কথাও বলা হয়েছে। সারোয়ার নামের এক ব্যক্তি সুব্রতর প্রতিনিধি হিসেবে এ ক্ষেত্রে মূল কাজ করছেন। সার্বক্ষণিক সুব্রতর সঙ্গে থাকেন আমিনবাজারের শরীফুল নামের একজন। সুব্রতর একসময়ের গাড়িচালক ওসমানও তাঁর সঙ্গে থাকেন। এ ছাড়া সুব্রতর সহযোগী হিসেবে জিল্লু, শাহ বাদলসহ কয়েকজনের নাম জানা গেছে।

সুব্রতর পাশাপাশি আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সহযোগীরাও মগবাজার-মালিবাগ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এখন জিসানের অবস্থান দুবাইয়ে।

নব্বইয়ের দশকে ঢাকার অপরাধজগতের আলোচিত নাম ছিল সুব্রত বাইন। আধিপত্য বিস্তার করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে তাঁর নাম আসা ছিল তখনকার নিয়মিত ঘটনা। এসব কাজ করতে গিয়ে অসংখ্য খুন-জখমের ঘটনাও ঘটেছে।

কেউ কোণঠাসা, আধিপত্য বাড়ছে কারও

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই শীর্ষ সন্ত্রাসীর সাজা মওকুফ হয়েছিল। একসময় মোহাম্মদপুর এলাকার অপরাধজগতের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল জোসেফ ও তাঁর সহযোগীদের। সর্বশেষ জোসেফের হয়ে অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করতেন তাঁর ভাই আনিস আহমেদের ছেলে সাবেক কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আসিফের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়া হয়েছিল।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সরকার পতনের পর জোসেফ-আসিফের তৎপরতা মোহাম্মদপুর এলাকায় এখন নেই বললেই চলে। তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। এখন মোহাম্মদপুর এলাকায় তৎপরতা বেড়েছে সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আারেক শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের। এই এলাকার আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার বাদলও এখন সক্রিয়। যে কারণে পিচ্চি হেলাল ও কিলার বাদলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি মোহাম্মদপুরের কয়েকটি সংঘাত-সহিংসতার পেছনে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বই প্রধান কারণ বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে।

একইভাবে রাজধানীর মিরপুর, পল্লবী ও কাফরুল এলাকায় অন্তত ছয়জন সন্ত্রাসী বিভিন্নভাবে সক্রিয়। এর মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী মফিজুর রহমান ওরফে মামুন সবেচেয়ে বেশি তৎপর বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। মামুন পল্লবীর ‘ধ ব্লকের মামুন’ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ২৭টি মামলা রয়েছে। ২০০২ সালে পল্লবী থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মামুন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পল্লবী থানা বিএনপির ৯১ নম্বর ওয়ার্ড (সাংগঠনিক ওয়ার্ড) কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় তাঁকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, কারাগারে থাকা অবস্থাতেই মিরপুরের অপরাধজগতের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ ছিল কিলার আব্বাসের হাতে। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর এ তৎপরতা আরও বেড়ে গেছে। আব্বাসের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত বিদেশে পলাতক আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত হোসেন ওরফে সাধুর তৎপরতা অনেকটাই কমেছে বলে জানা গেছে। শাহাদাত ২০০২ সালে মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার নাইম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে যাঁরা কারাগারের বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের ওপর সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি রাখা দরকার। এ কাজ ঠিকভাবে করতে না পারলে সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সরকার পতনের পর জোসেফ-আসিফের তৎপরতা মোহাম্মদপুর এলাকায় এখন নেই বললেই চলে। তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। এখন মোহাম্মদপুর এলাকায় তৎপরতা বেড়েছে সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া আারেক শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট