১. মা-বাবার বই না পড়া
শিশুরা যা দেখে, তাই শেখে। আপনি যতই বলুন না কেন, শিশুরা আপনার কাজ দেখে শিখবে। তাই, যদি আপনি নিজে বই না পড়েন, তবে শিশুদেরও পড়ায় আগ্রহ তৈরি হবে না।
**সমাধান**
আপনারাও বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সন্তানের সামনে পত্রিকা বা বই পড়ুন। সন্তানকে পড়ানোর সময় পাশে বসে নিজেরাও পড়তে পারেন।
২. বইয়ের ফরম্যাটে তারা আগ্রহী নয়
ডিজিটাল যুগে শিশুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভিডিও গেমস বা ইউটিউব ভিডিওর দিকে বেশি ঝুঁকে। প্রিন্ট বইয়ের ফরম্যাট তাদের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয় না।
**সমাধান**
শিশুদের স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে। পাশাপাশি বইয়ের ধরণে নতুনত্ব আনুন—গ্রাফিক উপন্যাস বা ৩ডি বইয়ের মতো আকর্ষণীয় ফরম্যাট দিয়ে তাদের আগ্রহ বাড়ানো যেতে পারে।
৩. বইয়ের বিষয়গুলো তাদের পছন্দ নয়
শিশুরা বইকে অনেক সময় বিরক্তিকর মনে করে। আসলে তারা বলতে চায়, ‘আমাকে আকর্ষণীয় কিছু পড়তে দাও’। মা-বাবারা হয়তো তাদের পছন্দ অনুযায়ী বই নির্বাচন করেন না।
**সমাধান**
শিশুর পছন্দ অনুযায়ী বই নির্বাচন করুন। তাদের পছন্দের টপিক জানতে গ্রন্থাগারিক, শিক্ষক বা অন্যান্য অভিভাবকের পরামর্শ নিন। শিশুকে নিয়ে যান বইয়ের দোকানে, যেখানে সে নিজে বই বেছে নিতে পারবে।
৪. শিশুরা পড়ার উদ্দেশ্য খুঁজে পায় না
শিশুরা গল্পের জগতে হারিয়ে যেতে পছন্দ করে। গৎবাঁধা বিষয় পড়তে চায় না। ফলে বই পড়াকে তারা বোঝা মনে করতে পারে।
**সমাধান**
পড়াকে মজার করে তুলুন। গল্প বা ছন্দে পড়ান, বা খেলাধুলার মাধ্যমে পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
৫. বই পড়া মানে পাহাড় ডিঙানো
অনেক সময় বড় আকারের বই শিশুর কাছে কঠিন মনে হয়, যা তাকে বিরক্ত করে এবং আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
**সমাধান**
বয়স উপযোগী বই দিন এবং সহজ শব্দ ব্যবহার করতে বলুন। শিশুদের পড়ার সময় উচ্চস্বরে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, এতে তাদের একঘেয়েমি কাটবে।
৬. অন্য কোনো সমস্যা আছে কি?
কিছু শিশুদের পড়ার সমস্যা থাকতে পারে, যা খুঁজে বের করা প্রয়োজন। কখনো দৃষ্টিশক্তি বা অন্য কোনো সমস্যা এর পেছনে কারণ হতে পারে।
**সমাধান**
শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করুন এবং দৃষ্টিশক্তির সমস্যা পরীক্ষা করুন।
**শেষ কথা**
অন্য শিশুদের সঙ্গে আপনার সন্তানের তুলনা করবেন না। এতে সে হতাশ হতে পারে। সব সময় ‘পড়তে বসো’ বলার বদলে তাকে পড়ার জন্য উৎসাহিত করুন।
*”শিক্ষা হলো আলো, যা আমাদের ভেতরের অন্ধকারকে দূর করে।”*