দ্যা নিউ ভিশন

বাংলাদেশকে রানবন্যায় ভাসিয়ে ভারতের সিরিজ জয়

বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই ২২১ রান তাড়ায় বড় ইনিংস খেলতে পারেননি

ভারত: ২০ ওভারে ২২১/৯
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯
ফল: ভারত ৮৬ রানে জয়ী।

ভারতের ইনিংসের ১০ ওভার শেষ। অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের বিষেণ সিং বেদি স্ট্যান্ডটা তখনো বেশ ফাঁকা। ভারতের মাঠে ভারতের খেলা, কিন্তু মাঠ কানায় কানায় ভরেনি—এমন দৃশ্য কমই দেখা যায়। দিল্লি পুলিশের কড়া নিরাপত্তার কারণেই নাকি দর্শকদের মাঠে ঢুকতে দেরি। পাওয়ার প্লের পর মাঠে ঢোকা দর্শকেরা দেখলেন, টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো বাংলাদেশ দল ততক্ষণে ৪৫ রানে তুলে নিয়েছে ৩ উইকেট।

ভারতের ইনিংসে বাংলাদেশের সাফল্য ওটুকুই। এরপর রিংকু সিং ও নীতিশ কুমারের জুটি ৪৯ বলে ১০৮ রান যোগ করে ম্যাচটাকে নিয়ে যায় অনেকটাই বাংলাদেশের নাগালের বাইরে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ভারতের করা ২২১ রান আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৪ উইকেটে ২২৪ এখনো শীর্ষে। জবাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা উইকেটে গিয়ে মারার চেষ্টা করেছেন আর আউট হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৩৫ রানে থামে বাংলাদেশ। ৮৬ রানের বড় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ ভারতের।

বড় রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে ওপেনার পারভেজ হোসেন প্রথম ওভারেই তিনটি বাউন্ডারি মারেন। অর্শদীপ সিংয়ের করা সে ওভারে ভালো শুরুর আভাস দিয়েও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পারভেজ (১৬) আউট, বোলার সেই অর্শদীপই। প্রথম ম্যাচের পর কালও ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকার নাজমুল (১১)।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটন দাসও (১৪) বরুণ চক্রবর্তীর বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড। ৬ রানেই টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। বাকি ব্যাটসম্যানরা শুধু হারের ব্যবধানটাই কমানোর চেষ্টা করেছেন।

গোয়ালিয়রে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দলের রান ১২০-এর ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কাল সেই ভূমিকায় ছিলেন এ সিরিজেই আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিকে বিদায় বলা মাহমুদউল্লাহ। ৩৯ বলে ৪১ রান করেছেন, বাংলাদেশের রান তাতে গেছে ১৩০-এর ঘরে।

ভারতের ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওভারেই দুই ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা ৩ বাউন্ডারিতে ১৫ রান তুলে নেন। তবে পরের ওভারে তাসকিনের স্লোয়ার বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে নাজমুলের হাতে ক্যাচ তোলেন সঞ্জু। পরের ওভারেই গতিময় বলে অভিষেকের স্টাম্প ভাঙেন শরীফুলের জায়গায় সুযোগ পাওয়া পেসার তানজিম হাসান।

ব্যক্তিগত ৫ রানে জীবন পাওয়া নীতিশ পাওয়ার প্লে শেষে দুটি প্রায় নীরব ওভারের (৬ রান, ১১ রান) পর স্পিনারদের বোলিংয়ে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে ২৭ বলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি করেন। ফিফটি করতে তাঁর চেয়ে ১ বল কম খেলেন রিংকু। দুজনের ১০৮ রানের জুটি হয় মাত্র ৪৯ বলে। ১৪তম ওভারে ৩৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলা নীতিশকে থামান মোস্তাফিজ। রিংকু ৫৩ রান করেন ২৯ বলে। পরে হার্দিক পান্ডিয়া এসে ৩২ রান যোগ করেন ১৯ বলে।

তিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের সিংহভাগ রানই এসেছে মিরাজ ও রিশাদের স্পিনে। দুজনের ৭ ওভারেই ১০১ রান নিয়েছে ভারত, উইকেট ৩টি। রিশাদের নেওয়া সেই ৩ উইকেটের সব কটিই এসেছে ইনিংসের শেষ ওভারে। ৫০ রান হয়েছে তানজিমের ৪ ওভারেও। তবে তাঁর সান্ত্বনা দুটি উইকেট। মোস্তাফিজের ২ উইকেট এসেছে ৩৬ রানের বিনিময়ে। ওভারপ্রতি ১১.২০ রান রেটের ম্যাচেও তাসকিন ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ২২১/৯ (নীতিশ ৭৪, রিংকু ৫৩, পান্ডিয়া ৩২; রিশাদ ৩/৫৫, তাসকিন ২/১৬, মোস্তাফিজ ২/৩৬, তানজিম ২/৫০)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (মাহমুদউল্লাহ ৪১, পারভেজ ১৬, মিরাজ ১৬, লিটন ১৪; বরুণ ২/১৯, নীতিশ ২/২৩)।

ফল: ভারত ৮৬ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নীতিশ রেড্ডি।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ