টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর। খুলনায় সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ম্যাচের ৯ মাস পর ২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর এই সংস্করণে দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলে বাংলাদেশ। নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে সেদিন অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহ নামের এক অলরাউন্ডারের। ওই ম্যাচের ১৭ বছর ৩৭ দিন পর আজ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। সময়ের হিসাবে ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় দীর্ঘতম ক্যারিয়ারের মালিক মাহমুদউল্লাহ বিদায় নিচ্ছেন অনেকগুলো রেকর্ড সঙ্গী করে।
গোয়ালিয়রে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ছিল এই সংস্করণে মাহমুদউল্লাহর ১৩৯তম ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা তাঁরই। সব দেশ মিলিয়েই মাহমুদউল্লাহর চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র তিনজন। এই সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচ খেললে সামনে থাকবে দুজন। যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবেন মাহমুদউল্লাহ।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ
ম্যাচ | খেলোয়াড় | দেশ |
---|---|---|
১৫৯ | রোহিত শর্মা | ভারত |
১৪৭ | পল স্টার্লিং | আয়ারল্যান্ড |
১৪১ | জর্জ ডকরেল | আয়ারল্যান্ড |
১৩৯ | মাহমুদউল্লাহ | বাংলাদেশ |
১২৯ | সাকিব আল হাসান | বাংলাদেশ |
১২৯ | মোহাম্মদ নবী | আফগানিস্তান |
বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদউল্লাহর ম্যাচ। এটিও বাংলাদেশের রেকর্ড। ৩৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে দুইয়ে সাকিব। তবে ম্যাচ জয়ে দুজনই সমানে–সমান, মাহমুদউল্লাহর মতো সাকিবের নেতৃত্বেও ১৬টি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ।
২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালে জুলাই পর্যন্ত টানা ২৯ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। ছোট সংস্করণে বাংলাদেশকে টানা নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড এটি। টানা ২৬ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে দুইয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা (২০১৫-১৭)।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মাহমুদউল্লাহর। ৫৭ ছক্কা নিয়ে দুইয়ে লিটন দাস।
২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৬ বার অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ বার অপরাজিত ছিলেন সাকিব।
২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা ৬৬ ইনিংসে একবারও শূন্য রানে আউট হননি মাহমুদউল্লাহ। এটিও বাংলাদেশের রেকর্ড। টানা ৯০ ইনিংসে শূন্য রানে আউট না হয়ে সবার ওপরে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচসেরার স্বীকৃতিতে দুইয়ে মাহমুদউল্লাহ। ১২ বার ম্যাচসেরা হয়ে শীর্ষে সাকিব।
বাংলাদেশের হয়ে টানা টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ডটা এক সময় মাহমুদউল্লাহরই ছিল। ২০১৫ থেকে ২০২১ সালে মধ্যে টানা ৫৪ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা পরে কেড়ে নিয়েছেন আফিফ হোসেন। তিনি খেলেছেন টানা ৬১ ম্যাচ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। ২৫৫১ রান নিয়ে শীর্ষে সাকিব।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ৪৯টি জয়ের অংশ ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৫২ ম্যাচ জিতে ওপরে শুধু সাকিব।
১২ অক্টোবর হায়দরাবাদে নিজের বিদায়ী টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার পর এই সংস্করণে মাহমুদউল্লাহর ব্যাপ্তি হবে ১৭ বছর ৪১ দিন, যা আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে কোনো খেলোয়াড়ের তৃতীয় দীর্ঘ ক্যারিয়ার। সবচেয়ে লম্বা ক্যারিয়ার সাকিব আল হাসানের ১৭ বছর ২০৯ দিন। সাকিবের পর সবচেয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ার জিম্বাবুয়ের শন উইলিয়ামসের, ১৭ বছর ১৬৬ দিন।
ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির দিন মাহমুদউল্লাহর বয়স। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ডটা ২০২২ সালেই জুলাই থেকেই তাঁর। মোহাম্মদ রফিকের (৩৬ বছর ৮৪ দিন) রেকর্ড ভাঙেন তিনি। ১২ অক্টোবর সিরিজের শেষ ম্যাচটি খেলার দিন মাহমুদউল্লাহর বয়স হবে ৩৮ বছর ২৫১ দিন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে মাহমুদউল্লাহর চেয়ে বেশি বয়সে ম্যাচ খেলেছেন শুধু সাবেক পেসার জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা (৪০ বছর ২৮৩ দিন)।