শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক শিক্ষক রাজনৈতিক প্রভাব হারানোর ভয়ে শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিতে পারেননি। বেশ কিছু শিক্ষক চাইলেও সাহস করতে পারেননি, যার ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ২,০০০ শিক্ষক এখন তাদের নিজ প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারছেন না। অনেককে জোরপূর্বক পদত্যাগ, অপসারণ, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকতে হচ্ছে বা কর্মস্থলে অবাঞ্ছিত ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোট নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে তাদের স্বপদে বহালের জন্য প্রজ্ঞাপন জারির আহ্বান জানিয়েছে। গত ২৭ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টার বরাত দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয় যে, শিক্ষকেরা ব্যক্তিগতভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে।
এছাড়া, ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ ও হেনস্তার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়। উপদেষ্টা মহোদয় নির্দেশ দিয়েছেন যে, দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষক জোটের আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু এখনো শিক্ষকদের পদত্যাগ ও হেনস্তা করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তিনি উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট এক বিস্ময়কর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটেছে, যা দেশের অনেক মানুষের মনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা অপমান, অপদস্থ এবং মারধরের শিকার হয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য বক্তারা শিক্ষকদের নিরাপত্তা এবং তাদের স্বপদে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। তারা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যখন শান্তিপূর্ণ ছিল, তখন সরকার ছিল নির্বিকার। তবে এখন শিক্ষকরা ভয়ের মধ্যে রয়েছেন এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।