রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আব্দুল বাকী পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে একটি ভ্রাম্যমাণ খাবার দোকান চালু করেছেন। ছাত্র সংসারের দায়িত্ব নিতে তিনি এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। দুই বছর আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। বর্তমানে তিনি তার মা ও ছোট বোন নিয়ে রাজশাহীর সিরোইলে বসবাস করেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চালাতে আব্দুল বাকী টিউশনি ও বিভিন্ন কোম্পানির ছোট প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাজশাহী কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শাহাদাতের মাধ্যমে একটি আইটি কোম্পানিতে আউটসোর্সিং শুরু করেন।
তার ব্যবসা করার ইচ্ছা ছিল, তাই চাকরি, টিউশন ও কোচিং সব কিছু ছেড়ে গত এক মাস আগে ক্যাম্পাসে একটি ভ্রাম্যমাণ খাবার দোকান চালুর চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকে “আহার মেলা” নামে খাবার দোকানটি চালু করেন।
এখন আব্দুল বাকীর এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের হামজা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মুত্তাকিন, এবং রাজশাহী কলেজের শাহাদাত ও সামিউল। “ঘরোয়া খাবারের স্বাদ” স্লোগানে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে দেখা যাচ্ছে ‘আহার মেলা’।
খাবার দোকান চালুর গল্প শেয়ার করতে গিয়ে আব্দুল বাকী জানান, “একটি খাবারের হোটেল দেওয়ার জন্য আমি একটি ‘ফুড কাট’ কিনে সেটি মেরামত করি। যে বন্ধু চাকরির খোঁজ দিয়েছিল, তাকেসহ আরও একজন পার্টনার নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে আল্লাহর রহমতে এই খাবার মেলা চালু করি। এটি একটি ব্যতিক্রমী হোটেল, কারণ আমাদের মূলমন্ত্র হলো ‘ঘরোয়া খাবারের স্বাদ।’ শাহাদাতের বাসায় তার মায়ের সহযোগিতায় এবং আমার বাসায় রান্না প্রস্তুত করা হয়।”
আব্দুল বাকী খাবারের মানের ব্যাপারে বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের খাবারে যেহেতু মায়ের হাতের ছোয়া আছে, তাই যারা আমাদের খাবার খায়, তারা তৃপ্তি নিয়ে ভালো রিভিউ দিয়ে যান। তবে প্রশংসায় পঞ্চমুখ না হয়ে, আমরা আরও উন্নতির চেষ্টা করছি যাতে আমাদের এই অথেনটিক ঘরোয়া খাবার আরও বেশি ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে তুলে দিতে পারি।”