রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী আবু রায়হান সম্প্রতি সাময়িক অব্যাহতি প্রাপ্ত শিক্ষক ড. সুজন সেনকে একটি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি আজকে চ্যালেঞ্জ করলাম, চারুকলার যে কোনো একজন শিক্ষার্থী দাঁড়াবে, অন্যদিকে সুজন সেন দাঁড়াবে। যদি সুজন সেন তার থেকে ভালো ছবি আঁকতে পারে, তাহলে আমরা সকল প্রকার আন্দোলন প্রত্যাহার করব এবং তাকে আগের মতো ক্লাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।”
এটি ঘোষণা করা হয় রবিবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ড. সুজন সেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও তার অপসারণের দাবি জানান। তারা ড. সেনকে অযোগ্য, স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, দালাল ও চাটুকার আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন আয়োজন করে।
আবু রায়হান বলেন, “ড. সুজন সেনের বিভিন্ন অনিয়মের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তদন্ত কমিটিকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি এই তদন্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হয়, তাহলে আমরা তা মেনে নেব না। তখন আমরা আরও শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলব।”
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান জানান, “আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি অযোগ্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত পাঁচ বছরে তিনি আমাদের কিছু শেখাননি। আমাদের বেশিরভাগ কাজ ব্যবহারিক, কিন্তু কখনও তাকে ব্যবহারিক কাজে দেখা যায়নি। যারা সুজন সেনের পক্ষে দালালি করছেন, আমরা তাদেরকে সতর্ক করছি। আমরা শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিপক্ষ না। আমি চাই প্রশাসন স্বচ্ছতার সঙ্গে একটি সুন্দর তদন্ত করুক। তবে যতদিন না পর্যন্ত সুজন সেনের চাকরিচ্যুতি হচ্ছে, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না।”
বিভাগের অন্য শিক্ষার্থী আসাদ সাদিক রাফি বলেন, “ড. সুজন সেনের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের ১৮ দিন হয়ে গেছে, কিন্তু তারা শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি। আমরা এ ধরনের তদন্ত মেনে নেব না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, নৈতিকতার অবনতি ঘটলে তার অপসারণের সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুক।”
মানববন্ধনে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত ২৫ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ড. সুজন সেনকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ৮ সেপ্টেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা ও বিভাগের সভাপতির কাছে প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর জরুরি সভায় ড. সেনকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং ১৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।