ফ্লু একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যা সাধারণত শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা ‘এ’ ও ‘বি’ দ্বারা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ‘সি’ এর লক্ষণ তুলনামূলকভাবে কম তীব্র এবং এটি মৌসুমি ফ্লু নয়। সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ফ্লু সেরে যায়, কিন্তু প্রতিবছর নতুন ধরন প্রকাশ পায়, তাই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের টিকা নেওয়া জরুরি। একবার ইনফেকশন হলে, সেই ধরন থেকে কিছুদিনের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।
মৌসুমি ফ্লুর সাধারণ লক্ষণ হলো: জ্বর (১০০ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত), শুকনা কাশি, গলাব্যথা, নাক বন্ধ হওয়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, ঘাম হওয়া এবং শরীর ঠান্ডা অনুভব করা। কিছু ক্ষেত্রে, বমি ও পেটখারাপও হতে পারে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জ্বর নাও থাকতে পারে।
গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ২ বছরের কম বয়সী, ৬৫ বছরের বেশি, অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা রোগী, অন্তঃসত্ত্বা, ক্যানসার রোগী এবং যাদের ডায়াবেটিস বা অ্যাড্রেনাল সমস্যা আছে। ফ্লু মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে, যেমন নিউমোনিয়া, সেপসিস, হার্ট ফেইলিওর, এবং স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা।
ফ্লু সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা কথা বলার মাধ্যমে ছড়ায় এবং লক্ষণ শুরু হওয়ার আগে থেকে পাঁচ-সাত দিন পর্যন্ত সংক্রমণ হতে পারে। যদি শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা মাথা ঘোরা অনুভব করেন, দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষণ যেমন শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া লক্ষ্য করা উচিত।
প্রতিরোধের জন্য মাস্ক ব্যবহার, স্যানিটাইজার ব্যবহার, প্রচুর পানি পান করা এবং ভ্যাকসিন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফ্লুতে আক্রান্ত হলে টিকা নেওয়া যায় না। মারাত্মক জটিলতার আশঙ্কা হলে লক্ষণ শুরু হওয়ার দুই থেকে চার দিনের মধ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত।
— ডা. রোজানা রউফ, অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড