বাংলাদেশে যেসব বিদেশি উড়োজাহাজ ও শিপিং কোম্পানির সেবা চালু আছে, তাদের অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার নিয়ম শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব কোম্পানিকে তাদের বিক্রি করা টিকিটের জন্য দেশীয় এজেন্টরা ব্যাংক গ্যারান্টি বা অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো নিজেই প্রক্রিয়া মেনে এ সেবা দিতে পারবে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে। ফলে নিয়ম মেনে এখন থেকে সহজেই অর্থ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি বা গ্যারান্টি পাবে দেশে কর্মরত বিদেশি উড়োজাহাজ ও শিপিং কোম্পানিগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনকারী শাখাগুলো উড়োজাহাজ/শিপিং কোম্পানির এজেন্টদের পক্ষে উড়োজাহাজ/শিপিং কোম্পানিকে গ্যারান্টি দিতে পারবে। এ জন্য বেশ কিছু নিয়ম মানতে হবে। ঋণ ও ঋণসুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব নিয়ম রয়েছে, তা অবশ্যই মানতে হবে। একক ঋণগ্রহীতা সীমা, ঋণ নীতিমালা মেনে চলতে হবে। যে পরিমাণ গ্যারান্টি–সুবিধা দেওয়া হবে, তার বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত থাকতে হবে। এই সীমা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন সময়ে এই নিয়ম শিথিল করেছে, যখন বিদেশি কয়েকটি উড়োজাহাজ কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে তাদের টিকিট বিক্রির অর্থ নিতে পারছে না। ডলার–সংকটের কারণে অনেক দিন ধরেই তাদের অর্থ দেশে আটকে আছে। গত জুনে বিশ্বের বিমান পরিবহন কোম্পানিগুলোর সমিতি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর ৩২ কোটি ডলার অর্থ বাংলাদেশে আটকে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলো তাদের টিকিট বিক্রির টাকা ধীরে ধীরে নিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য গ্যারান্টি–সুবিধা আরও শিথিল করা হলো। আগে গ্যারান্টি পেতে বিলম্ব হওয়ায় দেশের প্রতি আস্থা কমে আসছিল বিদেশি উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলোর।
বর্তমানে বাংলাদেশে ২৮টি বিদেশি উড়োজাহাজ কোম্পানি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আরও এক ডজন কোম্পানি বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে।