মধ্যপ্রাচ্যে হামলা-সংঘাতের জেরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। লেবানন ও ইসরায়েলের হামলা এবং তার জেরে ইসরায়েলে ইরানের হামলার কারণে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে—এই আশঙ্কায় দাম বেড়েছে। যদিও বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ এখন যথেষ্ট।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৪ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৫৪ ডলারে উঠেছে। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৭২ সেন্ট বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭০ দশমিক ৮২ ডলারে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে লেবাননের বৈরুত শহরের বাচুরা এলাকায় ইসরায়েলের বোমা বর্ষণে দুজন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন। লেবাননে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ইসরায়েল-লেবাননে সংঘাতে ইরানও জড়িয়ে পড়ে। সেদিন রাতে তারা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১৮০টি উচ্চগতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এর মধ্য দিয়ে এই সংঘাত ইসরায়েল ও লেবাননের বাইরে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তেলের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু গতকাল বুধবার হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত বাড়ানো হয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ নিয়ে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র তেলের মজুত বৃদ্ধি করায় তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত ৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন বা ৩৯ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধি পেয়ে ৪১৭ মিলিয়ন বা ৪১ কোটি ৭০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। যদিও গত সপ্তাহে রয়টার্সের এক জরিপে বাজার বিশ্লেষকেরা ধারণা করেছিলেন, উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের মজুত ১৩ লাখ ব্যারেল কমবে।
ইসরায়েল ইরানের তেলখনিতে হামলা চালালে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ কমবে। যদিও রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ওপেকের হাতে এখন বাড়তি তেল আছে। তবে ইরান ইসরায়েলের তেল পরিশোধনাগারে হামলা চালালে সরবরাহে টান পড়তে পারে, এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আছে।
তবে এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত যা হয়, এবারও তার অন্যথা হয়নি। সেটা হলো অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছেড়ে সোনার মতো নিরাপদ বিনিয়োগমাধ্যম বেছে নিচ্ছেন। সে কারণে সোনার দাম গত কয়েক দিনে বেড়েছে, যদিও আজ তা কিছুটা কমেছে।
একই সঙ্গে ইউরোর বিপরীতে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। মার্কিন অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান ইতিবাচক হওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, বিশেষ করে কর্মবাজার বেশ শক্তিশালী। এই বাস্তবতায় বাজার আশা করছে, নভেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভ খুব বেশি হারে নীতি সুদহার কমাবে না। অন্যদিকে ইউরোপের যে বাস্তবতা, তাতে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী নভেম্বর মাসে নীতি সুদহার হ্রাস করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।