দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ১৪:৫৬

পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা

**পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি (Peripartum Cardiomyopathy)**

 

পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি একটি বিরল হার্টের রোগ, যা গর্ভধারণের শেষ পর্যায়ে অথবা প্রসবের পর পাঁচ মাসের মধ্যে মহিলাদের মধ্যে দেখা দেয়। এই অবস্থায় হৃদপিণ্ড দুর্বল হয়ে যায় এবং রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে হৃদস্পন্দন বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। গর্ভাবস্থায় এটি একটি জটিল এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতি।

 

**লক্ষণ:**

পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথির প্রধান লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস অথবা প্রসবের পর প্রথম কয়েক মাসে প্রকাশ পায়। লক্ষণগুলো হলো:

1. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা

2. শ্বাসকষ্ট, বিশেষ করে শোয়া অবস্থায়

3. পায়ে পানি আসা

4. বুক ধড়ফড় করা

5. দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন

 

এই লক্ষণগুলো কখনো কখনো গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মিলিত হতে পারে, তাই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

**কারণ:**

পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথির সঠিক কারণ এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে কিছু গবেষণায় উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে দেখা গেছে:

– হরমোনাল পরিবর্তন

– ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া

– হৃদপিণ্ডের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস

– জিনগত কারণ

 

**ঝুঁকির কারণগুলো:**

কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকি ফ্যাক্টর পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে, যেমন:

– ৩০ বছরের বেশি বয়সে গর্ভধারণ

– একাধিক গর্ভাবস্থা (যমজ বা তার বেশি)

– উচ্চ রক্তচাপ

– হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস

 

**চিকিৎসা:**

এই রোগের চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার এবং শারীরিক লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা। চিকিৎসায় সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়:

– হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ ও শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য ওষুধ

– রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কমাতে anticoagulants

– ডায়রেটিক্স, যা শরীরের অতিরিক্ত পানি কমাতে সাহায্য করে

– কিছু ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের পেসমেকার বা অন্যান্য ডিভাইসের প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে

 

**প্রতিরোধ ও পরামর্শ:**

পেরিপার্টাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি প্রতিরোধের কোনো নিশ্চিত উপায় নেই, তবে কিছু পদক্ষেপ ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে। যেমন:

– গর্ভাবস্থার শেষ মাসে ও প্রয়োজনে প্রসবের পর ইকোকার্ডিওগ্রাফি পরীক্ষা করা

– উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা

– প্রি-এক্লাম্পসিয়া বা গর্ভাবস্থার সময় অস্বাভাবিক লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি, আলোক হেলথকেয়ার, পল্লবী, ঢাকা।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট