শরৎ বাংলার প্রকৃতির একটি অপরূপ ঋতু। এই ঋতুতে আকাশে সাদা মেঘের ভেলা এবং বাতাসে হালকা শীতল স্পর্শ মনকে প্রশান্ত করে। কাশফুল এই ঋতুর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। কাশফুলের নরম সাদা ফুল ফোটার সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করলে প্রকৃতির সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করা যায়। নদীর তীর, খোলা মাঠ, বা চরের প্রান্ত—এসব স্থানে কাশফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়।
**পদ্মার চর**
রাজশাহীর পদ্মার চর শরতে কাশফুলের সাদা সৌন্দর্যে ভরে ওঠে, যা নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে দুলতে থাকে। পদ্মার শীতল হাওয়া, কাশফুলের স্নিগ্ধতা আর নদীর ধারে বসে সময় কাটানো একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। স্থানীয়দের কাছ থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে পদ্মার তীর ধরে কাশফুলের এই সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
**সারিঘাট**
ঢাকার কাছের কেরানীগঞ্জের সারিঘাট গ্রামে কাশফুল দেখার জন্য এটি একটি শ্রেষ্ঠ স্থান। খালের স্বচ্ছ পানিতে বাচ্চাদের লাফানো, মাছ ধরা, এবং মাঝিদের নৌকা পারাপারের দৃশ্যের মধ্যে শহরের তাড়না থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। খালের পানির আয়নায় যখন দিনান্তে আকাশের রঙ বদলে যায়, পাশের বালিয়ারিতে সন্ন্যাসী কাশফুল ঝুঁকে প্রার্থনা করে। অন্যদিকে, সেই পানির আয়নায় ভ্রমণপিপাসুরা গাছের সবুজ আর মেঘের ধূসর আলাদা করার চেষ্টা করেন, যেন শেষ বিকেলের স্নিগ্ধ বাতাস বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
**মাওয়া ঘাট**
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাট শরৎকালে অন্যতম সুন্দর স্থান। পদ্মা নদীর তীরে কাশফুলের সাদা আভা ছড়িয়ে থাকে, যা নদীর তীর ধরে বিস্তৃত। নদী তীরবর্তী এলাকায় নৌকাভ্রমণ করার সময় কাশফুলের সাদা সমুদ্র দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই অনন্য। ঢাকার নিকটে হওয়ায়, মাওয়া ঘাট শরতের সাপ্তাহিক ছুটিতে এক দিনের ভ্রমণের জন্য আদর্শ স্থান।
**দিয়াবাড়ি**
ঢাকার উত্তরা এলাকায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান, যা শরৎকালে বিশেষ সৌন্দর্য ধারণ করে। এই সময়ে চারপাশে কাশফুলের শুভ্র সৌন্দর্য এবং নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করে। তুরাগ নদীর তীরে বিস্তীর্ণ কাশবন শরতের প্রকৃতিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে। বিকেলের স্নিগ্ধ হাওয়ায় কাশফুলের দোলানো দৃশ্য ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ। নদীর তীর ধরে নৌকায় চড়ে কাশফুলের সারি দেখতে দেখতে শরতের হালকা শীতল বাতাস উপভোগ করা যায়।