বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে মাঠপর্যায়ে কাজ করেছেন আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নাঈম। উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে তিনি মানুষের দুঃখদুর্দশা কাছ থেকে দেখেছেন। প্রতিবছর বন্যার সময় অনেক মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে যায়, আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয় এবং মানবেতর জীবন কাটাতে হয়—এ সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি উদ্যোগী হন। ঢাকায় এসে তিনি ভাসমান বাড়ির ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
আবদুল্লাহ বলেন, “অনেক আগেই ভাসমান বাড়ির ধারণা ছিল, কিন্তু বাস্তবায়নে তেমন কাজ হয়নি। কিছু পড়াশোনা করে বুঝলাম, বন্যার সময় ঘরের যেই অংশ ভেসে থাকে, পানি নেমে গেলে সেটি মেরামত করা খুব ঝক্কির কাজ এবং ব্যয়বহুল। তাই আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি, এমন একটি টেকসই বাড়ি তৈরি করব, যার নির্মাণব্যয় সাধারণ ঘরের কাছাকাছি হবে এবং দীর্ঘদিন স্বল্প রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহার করা যাবে।”
ভাসমান বাড়ির প্রকল্পের নাম ‘তরি’। এটি বন্যার সময় ভেসে থাকবে এবং পানি নেমে গেলে আগের অবস্থানে ফিরে যাবে। এই প্রকল্পে কাজ করেছেন আবদুল্লাহ আল নাঈম, সিয়াম আল নাহিয়ান এবং আবদুল আওয়াল। মূল মডেল তৈরিতে সহায়তা করেছেন অধ্যাপক মো. আবদুল মতিন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী সৈয়দ নাজমুল হক ও ব্র্যাকের সাবেক প্রকৌশলী নাসরিন জাহান।
ভাসমান বাড়িটির দুটি অংশ রয়েছে: সুপার স্ট্রাকচার এবং সাব-স্ট্রাকচার। সুপার স্ট্রাকচার অংশটি সাধারণ টিনের বাড়ির মতো নকশা করা হয়েছে, এবং সাব-স্ট্রাকচারে মরিচারোধী, টেকসই ও হালকা উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। বাড়িটিতে একটি বাথরুম, রান্নাঘর, বারান্দা এবং পানির ট্যাংক থাকবে, যা বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করা যাবে। আবদুল্লাহ আল নাঈম জানান, “সাধারণ পরীক্ষার জন্য ১:৬ স্কেলের একটি মিনি মডেল তৈরি করেছি, খরচ হয়েছে সাত হাজার টাকা। আপাতত আমরা তহবিলের জন্য অপেক্ষা করছি। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ পেলে তিন-চার দিনেই মূল বাড়ি তৈরি করতে পারব।”