আমরা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় দুভাবে কাশি দিই। হঠাৎ এবং সজোরে ফুসফুসের বাতাস বেরিয়ে আসে কাশির মাধ্যমে। কাশি শ্বাসনালি ও ফুসফুসকে শ্লেষ্মা, বাইরের বস্তু এবং জীবাণু থেকে মুক্ত করে পরিচ্ছন্ন রাখে। তাই কাশি প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়া। তবে অতিরিক্ত কাশি বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হতে পারে।
**কাশির প্রকারভেদ:** কাশি দুটি ধরনের—স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। স্বল্পমেয়াদি কাশি ভাইরাস বা জীবাণু সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ার কারণে হয়, যা সাধারণত তিন থেকে আট সপ্তাহে ভালো হয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী কাশি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আট সপ্তাহের বেশি এবং শিশুদের জন্য চার সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়।
**দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ:** এর মধ্যে বংশগত কারণ, দূষিত বাতাস, অ্যালার্জেন এবং ভাইরাস সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য। অ্যাজমা হলে শ্বাসনালি সংকুচিত হয়ে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং বুকে চাপ অনুভূত হয়। এ ধরনের কাশি সাধারণত রাতে ও সকালে বাড়ে। গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজও দীর্ঘস্থায়ী কাশি সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে ফিরে আসে।
ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ধূমপায়ীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এতে ফুসফুসের বায়ুপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং শ্বাসকষ্ট হয়। দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণে শরীরে পানি জমা, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। কাশি যদি দুই সপ্তাহের বেশি থাকে, বিশেষ করে যদি খুসখুসে কাশি হয়, তবে যক্ষ্মা পরীক্ষার প্রয়োজন।
**ডাক্তারের কাছে যাবেন যখন:** কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, কফের সঙ্গে রক্ত আসা, ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা কাশি, বুকব্যথা, জ্বর বা ওজন কমে গেলে।
**চিকিৎসা:** সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ধূমপান এবং দূষিত পরিবেশ এড়ানো উচিত। বাইরে গেলে মাস্ক পরা জরুরি এবং ঠাণ্ডার সময় গরম পানি পান করা উপকারী।
লেখক: অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজ, শাহবাগ, ঢাকা
চেম্বার: আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০, ঢাকা
হটলাইন: ১০৬৭২