চাল রপ্তানিতে ভারত নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল ২০২৩ সালে। বাসমতী ভিন্ন সাদা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞাও ছিল। তবে দেশটির সরকার রপ্তানির ওপর থাকা বেশির ভাগ বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ভারতে এবার ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশিই বৃষ্টি হয়েছে। ফলে চালের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সে কারণে বিভিন্ন রাজ্যে ধানের গোলা উপচে পড়বে বলেও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বের চালের বাজারে ভারত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ফলে ভারতের সিদ্ধান্ত রপ্তানির বাজারে বড় ধরনের প্রভাব রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেখে নেওয়া যাক, বিশ্বের চালের বাজারে ভারতের অবস্থান কী রকম:
২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে যত চাল রপ্তানি হয়েছিল, তার ৪০ শতাংশই এসেছিল ভারত থেকে। সেই হিসেবে ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ। ওই বছর বিশ্বের রপ্তানি বাজারে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টন চাল কেনাবেচা হয়েছিল। এর মধ্যে একা ভারতের অবদান ২ কোটি ২২ লাখ টন। এটি ছিল একটি রেকর্ড।
চালের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের পর চারটি অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে এ চারটি দেশ সম্মিলিতভাবে যত চাল রপ্তানি করেছিল, ভারত একাই তার চেয়ে বেশি চাল বিশ্ববাজারে বিক্রি করেছিল।
ভারত সব মিলিয়ে ১৪০টি দেশে চাল রপ্তানি করে।
যেসব দেশ ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি অ–বাসমতী চাল কেনে, তাদের মধ্যে রয়েছে বেনিন, বাংলাদেশ, অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন, জিবুতি, গিনি, আইভরি কোস্ট, কেনিয়া ও নেপাল।
ইরান, ইরাক ও সৌদি আরব মূলত ভারত থেকে ভালো মানের বাসমতী চাল কেনে।
২০২৩ সালে চাল রপ্তানির ওপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তার ফলে ভারতের চাল রপ্তানি ২০ শতাংশ কমে ১ কোটি ৭৮ লাখ টনে দাঁড়ায়। এ ছাড়া এক বছর আগের তুলনায় ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে ভারতের চাল রপ্তানি এক–চতুর্থাংশ কমে যায়।
ভারত চাল রপ্তানিতে নানা রকম বিধিনিষেধ দেওয়ার কারণে এশিয়া ও আফ্রিকার ক্রেতারা এই শস্য কিনতে ছোটেন থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও মিয়ানমারে। চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব দেশে চালের রপ্তানির মূল্য গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। চাল উৎপাদন করলেও সাধারণত রপ্তানি করার মতো অতিরিক্ত চাল এসব দেশের হাতে খুব বেশি থাকে না।