মিরপুর ১১ নম্বরে গেলে আপনার চোখে পড়বে ভিড়, হাঁকডাক আর পোড়া কাবাবের গন্ধে ভরা পরিবেশ। বিশেষ করে নান্নু মার্কেট পার হয়ে বড় মসজিদের মোড়ে পা রাখলেই এমন দৃশ্য দেখতে পাবেন। মিরপুরের এই অঞ্চলে বেশ কিছু বিখ্যাত কাবাবের দোকান রয়েছে, যেখানে পাওয়া যায় বিভিন্ন স্বাদের কাবাব।
### ১০ মিনিটের অপেক্ষা
মনজুর মোরশেদ, যিনি মিরপুরে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আছেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহে বড় মসজিদ মোড়ের কাল্লু কাবাব ঘরে যান গরুর কাবাব খেতে। তাঁর মতে, এখানকার গরুর চাপ, মুরগির চাপ আর লুচির স্বাদ অতুলনীয়। দোকানে তাওয়ার ওপর নানা ধরনের কাবাব ভাজা হচ্ছে আর বড় কড়াইয়ে গরম লুচি তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে গরুর মগজের ভুনা ফ্রাই অত্যন্ত জনপ্রিয়—একবার খেলেই এর স্বাদ মনে থেকে যাবে।
কাল্লু কাবাব ঘরে গরুর চাপের দাম ১৬০ টাকা, মুরগির চাপ ১৫০ টাকা, মগজের প্লেট ৩০০ টাকা, আর লুচি প্রতি পিস ১০ টাকা। দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ আরিফ জানান, দিনে ১০ থেকে ২০ কেজি মাংসের চাপ বিক্রি হয়, তবে তা খেতে চাইলে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে, কারণ অর্ডারের পরপরই চাপ ভাজা হয়।
### শুধু মাংস নয়, আছে মাছ ও পাখির কাবাবও
কালাম কাবাব ঘরের সামনে সাজানো আছে নানা ধরনের মেরিনেট করা মাংস। এখানকার বিশেষত্ব হলো, গরু, মুরগি ছাড়াও কোয়েল পাখি, সুরমা মাছ, চিংড়ি মাছের কাবাবও পাওয়া যায়। শীতের সময় অক্টোপাসও বিক্রি হয়।
### লাইভ কাবাব এক্সপেরিয়েন্সের খোঁজে
মিরপুরের কাবাবের স্বাদ নিতে এসেছেন রাইয়ান ও তাঁর বন্ধু আবির। তাঁরা বলেন, মিরপুরের কাবাব মোহাম্মদপুরের বিখ্যাত কাবাবের সঙ্গে সমানে সমান। আবির বলেন, লুচি দিয়ে মগজ ভুনা খাওয়ার স্বাদ কোনো দিনই ভুলবেন না।
### কয়েক দশকের ঐতিহ্য
মিরপুর কাবাব ঘর প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো। এই দোকানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল মোহাম্মদ শোকুর নামের একজনের হাত ধরে। এখানে ইটের ওপর তাওয়ায় নানা পদের কাবাব তৈরি হয়।
আপনিও যদি এই মগজ ভুনা আর গরম লুচির স্বাদ নিতে চান, তাহলে মিরপুর ১১ নম্বরে চলে আসতে পারেন। মেট্রোরেল বা বাসে ১১ নম্বর নামার পর রিকশা করে বা হেঁটে বড় মসজিদ মোড়ে পৌঁছে যাবেন মাত্র ১০ মিনিটে।