টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে রাহুল দ্রাবিড় দায়িত্ব ছাড়ার পর ভারতের প্রধান কোচ হয়েছেন গৌতম গম্ভীর। জাতীয় দলে তাঁর কোচিং অধ্যায়ের শুরুর অভিজ্ঞতা এখন পর্যন্ত অম্লমধুর।
গত জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কাকে তাদেরই মাটিতে টি–টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই করার মধ্য দিয়ে গম্ভীরের কোচিং–যাত্রা শুরু হয়। লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে আবার তাঁর দল হেরে যায় ২–০ ব্যবধানে, যা ছিল ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ২৭ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জয়। ওই সিরিজে লঙ্কান স্পিনারদের বিপক্ষে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা স্পষ্ট ফুটে ওঠে।
সব মিলিয়ে আপাত দৃষ্টিতে ভারতীয় দলকে এক সুখী পরিবারই মনে হচ্ছে। অতীতে বিরাট কোহলির সঙ্গে ঝামেলা থাকলেও তা ভারতের কোচ হওয়ার আগেই মিটিয়ে ফেলেছেন গম্ভীর। অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গেও তাঁর বোঝাপড়া ভালো।
যদিও সাফল্যের জন্য মরিয়া হয়ে থাকা গম্ভীরকে কয়েক মাস আগেও মাঠে বেশিরভাগ সময় আক্ষরিক অর্থেই ‘গম্ভীর ভাব’ নিয়ে থাকতে দেখা যেত। কিন্তু ইদানীং ড্রেসিংরুমের বাইরের বারান্দায় বসে দলের খেলা দেখার সময় হাসিখুশি গম্ভীরকেই চোখে পড়ছে।
তাহলে কি ভারতের কোচ হওয়ার পর বদলে গেছেন গম্ভীর? তামিম ইকবাল অন্তত এমনটা মনে করেন না। বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকা বাংলাদেশি ওপেনারের দাবি, ভারত এখন ভালো খেলছে বলেই গম্ভীরকে ঠান্ডা মেজাজের মানুষ মনে হচ্ছে। ভারত এক ম্যাচ খারাপ করলেই তাঁর আসল চেহারা বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশের চলমান ভারত সফরে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে আছেন তামিম। বৃষ্টির কারণে আজ কানপুর টেস্টের টস শুরু হতে যখন দেরি হচ্ছিল, তখন সিরিজের অফিশিয়াল সম্প্রচারকারী চ্যানেল স্পোর্টস–১৮ ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম জিও সিনেমায় আলোচনা করছিলেন তামিম ও ভারতের সাবেক উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান পার্থিব প্যাটেল।
এ সময় গম্ভীরের অধীন ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তামিম বলেন, ‘যখন আপনি জিততেই থাকবেন, তখন একজন মানুষের আসল চরিত্র সম্পর্কে জানতে পারবেন না। যখন আপনি একটি সিরিজ হারবেন এবং এরপর আরেকটি, তখনই আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। কোনো সন্দেহ নেই তিনি (গৌতম গম্ভীর) একজন যোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু তাঁকে এখনই কিছু বলাটা বেশ তাড়াহুড়া হয়ে যায়। ভারত একটা ম্যাচ খারাপ খেলুক, তখনই বুঝতে পারবেন।’
পার্থিব প্যাটেল মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত যে সাফল্য পেয়েছে, গম্ভীর সেটাই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, ‘রাহুল দ্রাবিড় ও রবি শাস্ত্রীর অধীন ভারত যে সাফল্য পেয়েছে, আপনি সেটাই বয়ে নিয়ে যেতে পারেন। কোনো কিছু বদলে না ফেলার সুযোগ আপনার আছে। তবে একইসঙ্গে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটা নিজস্ব উপায়ে করতে হবে। ড্রেসিংরুম থেকে যেসব খবর পাচ্ছি, তারা স্বচ্ছন্দ্যেই আছে এবং সবার মধ্যে টেস্ট জয়ের সংকল্প আছে।’
ভারতের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৬৫ ম্যাচ খেলা পার্থিব আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত চাপ না থাকলে আপনি আরও ভালো পারফর্ম করার দিকে মনোযোগী হবেন। সবাই জানি, তিনি দলকে একদম পরিষ্কার বার্তা দিয়ে থাকেন। সেখানে অস্বচ্ছতার কিছু নেই। হয় কালো, নয়তো সাদা। এ কারণেই ভারত তাদের খেলার ধরন নিয়ে খুব নিশ্চিত থাকে।’