দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০২:৪০

৪৪ বছর আগে ইরাকে ঢুকে পড়েছিল ইরাকি সেনাবাহিনী, যা আট বছর ধরে চলেছিল।

১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ইরান-ইরাক যুদ্ধ আট বছর স্থায়ী হয়েছিলছবি: এএফপি ফাইল ছবি

১৯৮০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরাকে হামলা শুরু করে ইরাক, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের সূচনা ঘটে। এই যুদ্ধটি ভূখণ্ডগত, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিরোধের ওপর ভিত্তি করে তেলসমৃদ্ধ দুই দেশের মধ্যে আট বছর ধরে চলেছিল। এই সংঘর্ষে পাঁচ লাখেরও বেশি সামরিক এবং বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছিল। আজ আমরা ৪৪ বছর আগে শুরু হওয়া ইরাক-ইরান যুদ্ধের দিকে ফিরে তাকাচ্ছি।

১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, ইরাকের সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইরানে প্রবেশ করে এবং একযোগে ইরানের বিমানঘাঁটিগুলোতে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। ইরানি বাহিনীও পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। মূলত সীমান্ত বিরোধের কারণে দুই দেশ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে জড়ায়, যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাণঘাতী যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত।

### বিরোধের কারণ
ইরান ও ইরাকের মধ্যে প্রায় ১,০০০ মাইল দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বিশেষ করে ইরানের খুজেস্তান এবং ইরাকের বসরা অঞ্চলে ভূখণ্ডগত বিরোধ পুরনো। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে শাত আল-আরব নদীর সীমানা নির্ধারণ নিয়ে উত্তেজনা বাড়ে, যা তেল রপ্তানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭৫ সালে আলজিয়ার্স চুক্তির মাধ্যমে কিছুটা শান্তি ফিরলেও, ভূখণ্ডগত ও মতাদর্শিক বিরোধের সমাধান হয়নি।

১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, যা পশ্চিমাপন্থী অবস্থান থেকে পশ্চিমাবিরোধী দেশে পরিণত হয়। ১৯৮০ সালের জানুয়ারিতে সাদ্দাম হোসেন ইরাকের প্রেসিডেন্ট হন, এবং মার্চ থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়।

১৯৮০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, আলজিয়ার্স চুক্তি বাতিল করে ইরাক শাত আল-আরব জলপথের ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। এর পরই ২২ সেপ্টেম্বর হামলা শুরু হয়।

### যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
ইরাকি বাহিনীর লক্ষ্য ছিল আবাদান ও খুজিস্তানের তেল শোধনাগার দখল করা। তবে যুদ্ধের প্রথম দিন দুই পক্ষই একে অপরের তেলক্ষেত্রে হামলা করেনি। ২৩ সেপ্টেম্বর আবাদানে হামলা চালিয়ে ইরাক সেখানে তেল শোধনাগার বন্ধ করে দেয়।

সৌদি আরব ও কুয়েত ইরাককে সমর্থন দেয়, আর পশ্চিমা দেশগুলো ইরাকে অস্ত্র সরবরাহ করে।

### ইরানের প্রতিরোধ
প্রথম দিকে ইরানি বাহিনী খুব বেশি প্রতিরোধ করতে পারেনি, তবে ১৯৮২ সালে পাল্টা হামলা চালিয়ে তারা নিজেদের তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল খুজেস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। ইরাক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে ইরান তা প্রত্যাখ্যান করে এবং বসরা বন্দরে হামলা চালাতে থাকে।

১৯৮৮ সালের জুলাই মাসে যুদ্ধ বন্ধের জন্য জাতিসংঘের সমাধান প্রস্তাব গ্রহণ করে ইরান, এবং ২০ আগস্ট যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। যদিও আলজিয়ার্স চুক্তি পুনরায় কার্যকর হতে দুই বছর লেগেছিল, ১৯৯০ সালের আগস্টে তা কার্যকর হয়।

সূত্র: এএফপি, কলাম্বিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অনলাইন, মিডলইস্ট কাউন্সিল অন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট