প্রযুক্তি কোম্পানি শাওমি সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বিক্রিতে টেক জায়ান্ট অ্যাপলকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ‘সেল-থ্রু ভলিউম’-এর ভিত্তিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে শাওমি। সেল-থ্রু ভলিউম মানে হল, গ্রাহকদের কাছে সরাসরি বিক্রি হওয়া ফোনের প্রকৃত সংখ্যা, যা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পাঠানো ফোনের সংখ্যা নয়। এই তথ্যটি বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্টের মাসিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
কাউন্টারপয়েন্টের মতে, শাওমির এই সাফল্য কোম্পানিটির শক্তিশালী অবস্থান এবং উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করে। ২০২১ সালের পর এই প্রথমবার শাওমি সেল-থ্রু ভলিউমের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বিক্রিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, এই অর্জন শুধু বিক্রয় বৃদ্ধির চিত্র নয়, বরং ভোক্তাদের পছন্দের পরিবর্তনকেও প্রতিফলিত করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপলের তুলনামূলকভাবে সীমিত পরিসরে পণ্য বিক্রির পরিমাণ শাওমির সাফল্যের একটি কারণ হতে পারে। এছাড়া, আইফোন সিক্সটিন সিরিজের উন্মোচনের পর অ্যাপল ভোক্তাদের আগ্রহ অর্জনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। কিছু প্রযুক্তি সংস্থার পূর্বাভাস জানাচ্ছে, এই সিরিজ গত বছরের মডেলের মতো একই পরিমাণ বিক্রি নাও হতে পারে।
তবে উল্লেখ্য, কাউন্টারপয়েন্টের প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র আগস্ট পর্যন্ত হিসাব করা হয়েছে, তাই এটি আইফোন সিক্সটিন সিরিজের প্রভাব প্রতিফলিত করে না। সাধারণত, বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আইফোনের বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশ্লেষকরা বলেন, “যদিও আইফোন সিক্সটিন সিরিজের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া খুব শক্তিশালী নয়, তবে আগামী মাসগুলোতে এটি শাওমির বিক্রয়কে ছাড়িয়ে যেতে পারে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শাওমি ২০২৪ সালে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠতে যাচ্ছে এবং এটি গ্লোবাল স্মার্টফোন বাজার পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শাওমি লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন মৌসুমে প্রচারের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছে, যা সামগ্রিক বিক্রয়কে শক্তিশালী করেছে।
কাউন্টারপয়েন্টের গবেষণা পরিচালক তারুণ পাঠাক বলেন, “শাওমি এ বছর পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে সাধারণ একটি কৌশল গ্রহণ করেছে। তারা বিভিন্ন ডিভাইসের বদলে দামের ওপর ভিত্তি করে প্রধান মডেলের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। এছাড়া, তারা বিক্রি ও বিপণনকে নতুন করে শক্তিশালী করেছে।”
কাউন্টারপয়েন্ট বলছে, শাওমির ২০০ ডলারের নিচে ডিভাইসগুলোর বাজারে শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে এবং ভোক্তারা শাওমির সাশ্রয়ী বিকল্পের দিকে বেশি আগ্রহী হচ্ছে।