দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে ৩ সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ৪২ জনের মৃত্যু হলো। তাঁদের মধ্যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাসপাতালগুলোতে। আর উত্তরের হাসপাতালগুলোতে মৃত্যু হয়েছে সাতজনের।
আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ছাড়া এ সময়ে এডিস মশাবাহিত এই রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪৩ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২৬ রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ১৯৩, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬২, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ১১৩, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ৭১, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ৪৮, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ২১ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে (সিটি করপোরেশন এলাকা ব্যতীত) ৩৫ জন ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩ হাজার ১০৮ জন। আর এ বছর এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২৫ জনের। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭২ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। উত্তরে এ সংখ্যা ১৫। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, আর চট্টগ্রামে ১৭ ও বরিশালে ১১ জন, খুলনায় ৫, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে ১ জন করে। আর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী ও ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। এ সময় হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ২০ হাজার ২৭৭ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭০০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৪৪ হাজার ২৪৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হন। এ সময় মারা যান ৮৫৩ জন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। এ সময় ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।