গরমে এসির বিকল্প কিছু কার্যকর এবং পরিবেশ বান্ধব উপায় রয়েছে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে। এসি চালানোর পরেও যদি গরম অনুভূত হয়, তাহলে এই টিপসগুলো মেনে চলতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, এসির পরিবর্তে এসব পদ্ধতি ব্যবহার করলে ঘর ঠান্ডা রাখা সম্ভব।
১. **জানালা কখন খুলবেন এবং কখন বন্ধ রাখবেন?**
দিনের বেলায় সূর্যের প্রখর আলো থেকে ঘরকে রক্ষা করতে জানালা বন্ধ রাখুন। বিশেষ করে পশ্চিম এবং উত্তরমুখী জানালাগুলোয় হালকা রঙের পর্দা টেনে দিন। সূর্যাস্তের পর যখন বাতাস ঠান্ডা হতে শুরু করবে, তখন জানালা খুলে ক্রস ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করান।
২. **জানালা, দেয়াল ও ছাদে প্রলেপ লাগানো:**
জানালায় হিট প্রোটেক্টিভ উইন্ডো ফিল্ম ব্যবহার করতে পারেন, যা সূর্যের তাপ প্রতিরোধ করবে। এছাড়া ছাদ এবং দেয়ালে ইনসুলেশন করলে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৩. **ছাউনি ব্যবহার:**
জানালার ওপর ছাউনি টানিয়ে দিলে সূর্যের তাপ অনেকটা আটকানো যায়। সানশেড বা হালকা রঙের ছাউনি থাকলে ঘর ঠান্ডা থাকে।
৪. **দেয়াল, মেঝে ও আসবাবপত্রের রঙ পরিবর্তন:**
হালকা রঙের দেয়াল, মেঝে, এবং আসবাবপত্র তাপ শোষণ কমায়। ঘরে ঠান্ডা রাখার জন্য হালকা রঙ এবং তাপনিরোধক রঙ ব্যবহার করুন।
৫. **ছাদ ঠান্ডা রাখা:**
ছাদের রঙ সাদা করলে সূর্যের তাপ প্রতিফলিত হয়ে ঘর ঠান্ডা থাকে। ছাদে বাগান করা বা সোলার প্যানেল বসিয়ে ছাদকে ঠান্ডা রাখা যায়।
৬. **সিলিং ফ্যান সঠিকভাবে ব্যবহার করুন:**
ফ্যানের পাখাগুলো ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরানো উচিত, যাতে গরম বাতাস বের হয়ে যায়।
৭. **ঠান্ডা বাতাস তৈরি করুন:**
ফ্যানের সামনে বরফ বা ঠান্ডা পানির বালতি রেখে এয়ার কুলারের মতো ঠান্ডা বাতাস পেতে পারেন।
৮. **এক্সস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন:**
এক্সস্ট ফ্যান তাপ বাইরে বের করে এবং ঠান্ডা বাতাস ভেতরে আনতে সাহায্য করে।
৯. **বিছানার কাপড় পরিবর্তন:**
সুতি চাদর এবং হালকা রঙের বিছানার কাপড় ব্যবহার করলে ঠান্ডা অনুভব হবে। প্রাকৃতিক ফাইবারের তোশক বা গদি ব্যবহারও ভালো উপায়।
১০. **বাতি পরিবর্তন করুন:**
এলইডি লাইট ব্যবহার করুন, যা তাপ কম উৎপন্ন করে।
১১. **রান্নার সময় কমিয়ে দিন:**
গরমে দ্রুত রান্না শেষ করা উচিত, যাতে ঘরের তাপমাত্রা বাড়ে না।
১২. **বৈদ্যুতিক যন্ত্র কম ব্যবহার করুন:**
যন্ত্রপাতি ব্যবহার শেষে সংযোগ বন্ধ রাখুন, কারণ এসব থেকে তাপ উৎপন্ন হয়।
১৩. **গাছ লাগান:**
ঘরের আশেপাশে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে পারেন। গাছ তাপ শোষণ কমায় এবং ঠান্ডা বাতাস দেয়।
১৪. **ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন:**
ঘরের আর্দ্রতা কমিয়ে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
১৫. **শরীর ঠান্ডা রাখা:**
সুতির পোশাক পরা, প্রচুর পানি খাওয়া, এবং ঠান্ডা পানিতে গোসল করে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে।
এই উপায়গুলো মেনে চললে ঘর এসির মতো না হলেও অনেকটাই ঠান্ডা থাকবে।