বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের পক্ষে-বিপক্ষে বিনোদন জগতের তারকারা বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক পক্ষ আন্দোলনকারীদের হুমকি দেয়, অন্য পক্ষ ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। সরকারের পতনের পর তারকাদের নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
সম্প্রতি আলোচনায় আসে ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমীর একটি ছবি, যেখানে তাকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সঙ্গে দেখা যায়। ছবিটি ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় তোলা। এই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মৌসুমীর স্বামী, চিত্রনায়ক ওমর সানী।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিএফডিসির প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতিতে নতুন গঠিত সেন্সর বোর্ড সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওমর সানী বলেন, মৌসুমীর সেই ছবির জন্য তাদের অনেক ভুগতে হয়েছে।
ওমর সানী জানান, “ছবিটি ঠিক কবে তোলা হয়েছিল মনে নেই, তবে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে তোলা হয়। আমিও দাওয়াত পেয়েছিলাম, কিন্তু কক্সবাজারে শুটিং থাকায় যেতে পারিনি, তাই মৌসুমী একাই গিয়েছিল। ববিতা আপা ও মান্না ভাইও সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই ছবি পরবর্তী সময়ে আমাদের জন্য একটি কালো অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণের আন্দোলনের সময়ে মৌসুমীকে একাধিকবার এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।”
ওমর সানী স্পষ্ট করে বলেন, “রাষ্ট্র যেখানে থাকবে, প্রজারাও সেখানে থাকবে। শিল্পীদের সঙ্গে অনেকের ছবি থাকতে পারে, তবে মৌসুমী ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিল, কিন্তু কেন তা চেয়েছিল, সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। তবে সে রাজনীতিতে না জড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “মৌসুমীর এই ছবি আমাদের পরিবারকে এতটাই আতঙ্কিত করেছিল যে, শেষ ১৪ বছরে লন্ডনের কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার সাহস হয়নি। এমনকি লন্ডনের অনেক অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ পেলেও আমরা সেইসব অনুষ্ঠানে অংশ নিইনি এবং আগাম নেওয়া টাকাও ফেরত দিয়েছি।”
ওমর সানী জানান, “অনেকের ধারণা ছিল, আমরা লন্ডনে গেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করব। তবে পারিবারিক অশান্তি যাতে না বাড়ে, তাই এসব জটিলতায় জড়াতে চাইনি।”