অন্যের প্রতি সদয় আচরণ নিঃসন্দেহে একটি মূল্যবান গুণ। তবে এর অতিরিক্ত মাত্রা কোনোভাবেই লাভজনক নয়। যদি আপনি অন্যদের জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন বা তাদের প্রতি অতিরিক্ত দয়ালু হন, তাহলে একসময় এটি আপনার ওপর বোঝার মতো চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং আপনার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই জীবনে সবকিছুতে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। অন্যদের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে যত্নে রাখতে হবে এবং পরোপকার ও বিনয়ের একটি সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে। তবে, এই সীমারেখা সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য নয়, কারণ সবাই এতটা পরোপকারী বা বিনয়ী হয় না। যদি আপনি মনে করেন যে আপনার জীবনে এই সীমারেখার প্রয়োজন রয়েছে, তাহলে প্রথমে বুঝতে হবে আপনি সত্যিই অতিরিক্ত পরোপকারী বা বিনয়ী কি না। এর কিছু লক্ষণ নিম্নরূপ:
1. **ক্ষতিকর আচরণকে বারবার মেনে নেওয়া:** যদি কেউ আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং আপনি বারবার ক্ষমা করে দেন, তা হলেও নিজের স্বার্থ রক্ষা করা জরুরি। অন্যের জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হলে ভদ্রভাবে প্রতিবাদ করা উচিত।
2. **বিনয়ই যখন আপনার প্রধান পরিচয়:** যদি সবাই মনে করে আপনি খুব বিনয়ী বা পরোপকারী, তবে সুবিধাভোগীরা আপনার কাছ থেকে অতিরিক্ত সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করতে পারে, যা আপনার নিজের কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
3. **নিজের প্রয়োজনের ওপরে অন্যদের স্থান দেওয়া:** নিজের প্রয়োজনীয়তা—যেমন খাওয়া, বিশ্রাম বা বিনোদন—যদি আপনি অন্যদের জন্য বিসর্জন দেন, তা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। নিজের সুস্থতার কথা ভাবাও জরুরি।
4. **অন্যের অনুভূতির জন্য নিজেকে সব সময় দায়ী মনে করা:** সকলকে খুশি রাখা আপনার দায়িত্ব নয়। অন্যদের কষ্ট পেলে নিজেকে দায়ী মনে করার কোনো প্রয়োজন নেই।
5. **অন্যকে ভালো রাখতে আত্মসম্মান হারানো:** নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি কোনো ব্যক্তির সম্মুখীন হয়ে কথাবার্তা শুরু করতে হলে অনুমতি চান, এটি অনুচিত হতে পারে। বরং সরাসরি যোগাযোগ করে ভুল বোঝাবুঝি মেটানো উচিত।
এই লক্ষণগুলো চিনে রেখে আপনি নিজের জীবনকে আরও সুন্দর এবং ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে পারবেন।