**কারণ:**
পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণের বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
– ডুইডেনাল বা গ্যাস্ট্রিক আলসার
– নন-স্টেরয়েড বা ব্যথানাশক ওষুধের প্রভাবে পাকস্থলীর ঘা
– ইসোফোজিয়াল ভ্যারিকস
– লিভার সিরোসিসের ফলে খাদ্যনালির রক্তনালি ফুলে ওঠা
– পাকস্থলীর ক্যানসার বা ম্যালরিওয়েস টেয়ার, যা বারবার বমির কারণে খাদ্যনালির ঝিল্লি ছিঁড়ে যাওয়া
প্রধানত, পাকস্থলীর আলসারজনিত কারণই রক্তবমি ও কালো পায়খানার জন্য দায়ী।
**উপসর্গ:**
– রক্তক্ষরণের ফলে বমির রং কালচে বা কফি গোলা পানির মতো হতে পারে।
– অতিরিক্ত ক্ষরণের ফলে বমির সঙ্গে জমাটবাঁধা রক্ত দেখা দিতে পারে।
– পায়খানার রং সাধারণত আলকাতরার মতো হয়ে থাকে।
– কিছু ক্ষেত্রে পায়খানার সঙ্গে টাটকা বা জমাট রক্তও পড়তে পারে।
– রক্তবমি ও কালো পায়খানা ছাড়াও মাথা ঘোরা, বুকের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপ কমে যাওয়া হতে পারে।
– রক্তক্ষরণের কারণে চোখ-মুখ ফ্যাকাশে দেখায়।
**নির্ণয় পদ্ধতি:**
অধিকাংশ ক্ষেত্রে, পরিপাকতন্ত্রের উপরের অংশের এনডোসকপি পরীক্ষা দ্বারা রক্তবমি ও কালো পায়খানার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়, তবে বাকি ২০ ভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়া ভালো হয় না এবং মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে বয়স্ক রোগী, যাদের অন্যান্য বড় ধরনের রোগ রয়েছে এবং যারা ৫ ব্যাগের বেশি রক্ত গ্রহণ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। পাকস্থলীর ক্ষতের বৈশিষ্ট্যের ওপর পুনঃরক্তক্ষরণ ও মৃত্যুর আশঙ্কা নির্ভর করে।
**কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত:**
রক্তবমি বা কালো পায়খানা হলে অবহেলা করা উচিত নয়। অবিলম্বে হাসপাতালে পরিপাকতন্ত্র, কোলোরেক্টাল ও লিভার বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। উন্নত দেশেও শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ রোগী পাকস্থলীর রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যায়। নিজে থেকে ব্যথার ওষুধ খাওয়ার ফলে দেশে এ রোগের হার মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। তাই যেকোনো অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া নিরাপদ।
**লেখক:** সহযোগী অধ্যাপক, কোলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
**চেম্বার:** ১৯ গ্রীন রোড, একে কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা।
**যোগাযোগ:** ০১৭১২-৯৬৫০০৯