বিয়ের আগে আমরা সাধারণত পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করি, কিন্তু প্রায়ই ভুলে যাই স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি। বাস্তবে, স্বামী ও স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই হলে কিছু সমস্যা হতে পারে কি না, তা নিয়ে অনেকেই জানতে চান।
রক্তের গ্রুপ এবিও সিস্টেম অনুযায়ী চারটি ধরণের—এ, বি, এবি, এবং ও। সাধারণভাবে, রক্তের গ্রুপের সামঞ্জস্য সন্তানের উপর তেমন প্রভাব ফেলে না। তবে এবিও গ্রুপের অসামঞ্জস্য হলে ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্ডিস হতে পারে।
আরএইচ অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি অনুযায়ী, রক্তের গ্রুপ পজিটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য প্রভাবগুলো হলো:
১. **স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ:** সন্তানের রক্তের গ্রুপও পজিটিভ হওয়ার ফলে মায়ের সঙ্গে সন্তানের রক্তের গ্রুপ সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে এবং কোনো সমস্যা হয় না।
২. **স্বামীর রক্ত নেগেটিভ, স্ত্রীর রক্ত পজিটিভ:** সন্তানের রক্ত গ্রুপ পজিটিভ বা নেগেটিভ হতে পারে। মায়ের রক্ত পজিটিভ থাকলে কোনো ক্ষতির শঙ্কা থাকে না।
৩. **স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ:** সন্তানের রক্তের গ্রুপও নেগেটিভ হওয়ার ফলে কোনো সমস্যা হয় না।
৪. **স্বামীর রক্ত পজিটিভ, স্ত্রীর রক্ত নেগেটিভ:** সন্তানের রক্ত পজিটিভ হলে মায়ের শরীরে পজিটিভ লোহিত রক্তকণিকা চলে আসতে পারে এবং অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না, তবে পরবর্তী সন্তান পজিটিভ রক্তের হলে রক্তশূন্যতা ও জন্ডিস দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা না হলে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
**রক্তের গ্রুপের অমিল হলে প্রতিরোধ ও চিকিৎসার পরামর্শ:**
১. অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার আগে বা প্রথম ট্রাইমেস্টারে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা উচিত।
২. মায়ের রক্ত নেগেটিভ হলে স্বামীর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
৩. স্বামীর রক্ত পজিটিভ হলে মায়ের রক্তে অ্যান্টিবডি আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।
৪. মায়ের শরীরে অ্যান্টিবডি অনুপস্থিত থাকলে ২৮ সপ্তাহে অ্যান্টিবডি টিকা দিতে হবে এবং সন্তানের জন্মের পর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করতে হবে। পজিটিভ হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় টিকা দিতে হবে।
৫. যদি অ্যান্টিবডি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে যায়, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিতে হবে।