বরগুনার বেতাগীতে জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার না দেওয়ায় মাকে মারধরের অভিযোগে ছেলে ও পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আহত ওই নারী বর্তমানে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মারধরের শিকার নারীর নাম রীতা রানী বসু (৫৫)। তিনি বেতাগী পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রামীণ ব্যাংক রোড এলাকা বাসিন্দা মৃত শিবু লাল বসুর স্ত্রী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তাঁর বড় ছেলে শুভ বসু ও পুত্রবধূ জ্যোতি মৃধা। তাঁদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন রীতা। ভুক্তভোগী নারীর আরও দুই ছেলে আছেন।
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে রীতার স্বামী শিবু লাল বসু মারা যান। এর পর থেকে কৌশলে মায়ের কাছ থেকে সব জমিজমা লিখে নেন বড় ছেলে শুভ বসু। বাড়িছাড়া করতে রীতার ওপর নির্যাতনও শুরু করেন। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন শুভর স্ত্রী জ্যোতি। ঘটনার দিন গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শাশুড়ি রীতার কাছে জ্যোতি জমির দলিল ও স্বর্ণালংকার চান। বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছেলে ও পুত্রবধূ মিলে রীতাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন। সেখান থেকে আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। পরে ছোট ছেলে শোভন বসু রীতাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে শোভন বসু বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর থেকেই জমি নিজেদের নামে ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করতে বড় ভাই (শুভ) এবং তাঁর স্ত্রী (জ্যোতি) মিলে মাকে দফায় দফায় নির্যাতন করতেন। কিন্তু পরিবারে অশান্তি হবে ভেবে মা কখনো এসব বিষয়ে জানাননি। তবে এবার নির্যাতন সইতে না পেরে মা আমাকে সব জানিয়েছেন। আমি আমার মায়ের নির্যাতনের বিচার চাই।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার শোভন বসু বাদী হয়ে শারীরিক নির্যাতন ও সম্পত্তি আত্মসাৎচেষ্টার অভিযোগে শুভ, তাঁর স্ত্রী জ্যোতিসহ চারজনের নামে বেতাগী থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন জ্যোতির মা নীলা রানী ও বাবা সুভাষ মৃধা। বর্তমানে তাঁরা পলাতক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, মামলায় অভিযুক্ত ছেলে ও পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে