এবারের ক্যাম্পাসে ফিরাটা ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা। দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফেরার অভিজ্ঞতা নতুন নয়, করোনাকালে দেড় বছর ক্লাসে না গিয়ে তারা সেই অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। তবে এবারের ফেরাটা সত্যিই আলাদা। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন, এবং ক্যাম্পাসে এখন রাজনীতি সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে। অনেক ভয়-শঙ্কা কাটিয়ে, অনেক প্রাণের ত্যাগের পর শিক্ষার্থীরা নতুন উদ্যমে ক্যাম্পাসে ফিরছেন।
এখনো সব বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণমাত্রায় ক্লাস শুরু করতে পারেনি। কোথাও প্রশাসনিক অস্থিরতা রয়েছে, আবার কোথাও ক্লাস অনলাইনে চলছে।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ১৮ আগস্ট থেকে ক্লাস শুরু করেছে। সেদিন পতাকা উত্তোলন, সম্মিলিত কণ্ঠে গান ও শপথ পাঠের আয়োজন করা হয়। উপাচার্য শামস্ রহমানসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা গেয়েছেন, ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে/কত প্রাণ হলো বলিদান।’ এই আয়োজনে বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ার বার্তা উঠে এসেছে। আইন বিভাগের শিক্ষার্থী পুনম শাহরিয়ার বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাস শুরু হয়নি, তবে কিছু বিভাগ নিজেদের উদ্যোগে ক্লাস নিচ্ছে। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদদের স্মরণে নীরবতা পালনের পর কবিতা ও গান গেয়েছেন। শিক্ষার্থী শামীমা জান্নাত বলেছেন, ‘এই ক্লাসটা অন্য দিনের ক্লাসগুলোর মতো ছিল না। শহীদদের স্মরণ করে আমরা মুক্তির মন্দির সোপানতলে গান গেয়েছি।’
মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের সময় নিহত শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন ও মো. রাকিবুল হোসেনকে স্মরণে নবনির্মিত মিলনায়তন ও মুক্তমঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে এবং একটি স্মৃতিকর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়।
শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ইমরান হোসেন বলেছেন, ‘আন্দোলনের শহীদকে স্মরণ করে ক্লাসে নতুন উদ্দীপনা দেখেছি। শিক্ষার্থীরা দেশ সংস্কারে উদ্যমী এবং আমি বিশ্বাস করি, জেনারেশন জি–ই আগামী বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।’