গাজীপুরের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে আজ শনিবার সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা। গতকাল শুক্রবার রাতে যৌথ বাহিনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানা গেছে।
শিল্প পুলিশ জানায়, গত কয়েক দিন গাজীপুর জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় তুচ্ছ দাবি নিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকায় এসব দাবি নিয়ে মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করেছেন। কোথাও কোথাও পুলিশ সদস্যরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিতে হয়েছে। তবে শিল্পকারখানা রক্ষায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, থানা-পুলিশ ও শিল্প পুলিশের যৌথ অভিযান শুরু হলে গতকাল থেকে গাজীপুরে কোথাও কোনো শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেনি। যৌথ বাহিনীর অভিযানে গত বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলেও গতকাল রাতের অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারপরও শিল্প পুলিশ আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
কোনাবাড়ী এলাকার তোষুকার কারখানার শ্রমিক কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যারা শ্রমিক, কাজ করে টাকা পাই, তারা এসব আন্দোলনের মধ্যে যাই না। বহিরাগত ব্যক্তিরা নানাভাবে উসকে শ্রমিকদের দিয়ে আন্দোলন করায়। আমরা মনে করি, যত বেশি কাজ করব, তত বেশি টাকা পাব। যারা শিল্পকারখানায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের থেকে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।’
গাজীপুর মহানগরীর তিন সড়ক এলাকার স্প্যার অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক বিলাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কারখানায় কোনো সমস্যা নেই। সব শ্রমিকই যথাসময়ে কাজে যোগ দিয়েছে।’
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক নিতাই চন্দ্র বলেন, সকাল থেকেই শ্রমিকেরা নিজেদের কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন। কোনোভাবেই যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে না পারে, এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা গত মাসের বেতনের দাবিতে কারখানার ভেতরেই শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছেন। এটি ছাড়া গাজীপুর জেলায় কোনো কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি। শিল্প পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। গত রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালানো হলেও এ সময় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গত সপ্তাহজুড়ে নানামুখী দাবিদাওয়া নিয়ে কারখানার শ্রমিক ও চাকরিপ্রার্থী বহিরাগত ব্যক্তিরা আন্দোলন করে আসছিলেন। এ সময় সড়ক অবরোধসহ বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।