তেহরান কাদের সাথে যোগাযোগ রাখবে সেটিও নির্ধারণ করে দিতে চায় ওয়াশিংটন— এমন মন্তব্য করে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। নিজেদের এজেন্ডা চাপিয়ে দিতে আলোচনার নাটক করছে ট্রাম্প প্রশাসন উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এশিয়ার দেশটি। এছাড়া,কোনো চাপেই মাথা নোয়াবে না ইরান, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খামেনি।
রাশিয়ার সাথে সদ্ভাবে তৎপরতার মধ্যেই, ইরানকে শান্তি চুক্তির প্রস্তাব দিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হুমকি-পাল্টা হুমকিতে বরাবরই সাপে-নেউলে ট্রাম্প আর ইরান সরকারের সম্পর্ক। তবে সবাইকে অবাক করেই এবার নমনীয় অবস্থান মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
গত শুক্রবার ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, আমি বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন, কারণ এটি ইরানের জন্য ভালো হবে। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায়, তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ওয়াশিংটনের আলোচনার প্রস্তাব অবশ্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে দেয়া ভাষণে, নাম উল্লেখ না করেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেছেন তিনি। খামেনির দাবি, আলোচনার নামে নিজেদের এজেন্ডা চাপিয়ে দেয়াই লক্ষ্য ওয়াশিংটনের।
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, কিছু শক্তিধর দেশ আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে, কিন্তু তাদের মূল লক্ষ্য সমস্যার সমাধান নয়। আসলে নিজেদের এজেন্ডা চাপিয়ে দিতেই আলোচনার কথা বলে তারা। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন যে, আসুন আলোচনায় বসুন, যাতে আমরা যা ইচ্ছা তাই আপনাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারি।
তিনি আরও বলেন, এখন আর বিষয়টি পরমাণু ইস্যুতে সীমাবদ্ধ নেই। তারা নতুন দাবি সামনে আনছে, যা ইরানের দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাদের চাওয়া আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা কমানো। আমরা কাদের সাথে যোগাযোগ করবো, কোথায় যাবো সেটিও তারা নির্ধারণ করে দিতে চায়। তাদের চাওয়া, আমরা যেন নির্দিষ্ট কিছু অস্ত্র না বানাই। আমাদের মিসাইলের পাল্লাও নির্ধারণ করে দিতে চান। এটি কি কারও পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব?
এদিকে, ইউরোপের সমালোচনাও করেছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু ইস্যুতে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগকারী ইউরোপ নিজেরদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে কি না, এই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।