বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে জামায়াতে ইসলামী, যাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় থাকে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে নেওয়া সংস্কারের উদ্যোগকে স্বাগত জানায় দলটি। এ জন্য তারা ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে বিভিন্ন পরামর্শ ও সুপারিশ দিয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সসহ কূটনীতিকদের এ কথা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। কূটনীতিকদের সম্মানে জামায়াত আজ ইফতার মাহফিল আয়োজন করে। ১১ বছর পর কূটনীতিকদের সম্মানে জামায়াত আয়োজিত ইফতার মাহফিলে দলটির আমির কূটনীতিকদের কাছে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-নিপীড়নের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের পাঁচজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে। ছয়জন নেতাকে কারাগারে বা পুলিশের হেফাজতে নির্মমভাবে হত্যা করাসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন, অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। এই নিষ্ঠুরতা সত্ত্বেও জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির জুলাই বিপ্লবে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি জামায়াতের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার উল্লেখ করে দলটির আমির বাংলাদেশে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল (পিআর) নির্বাচনব্যবস্থা চালুর পক্ষে জোরালো মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই ব্যবস্থায় জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে এবং ফ্যাসিবাদী শাসন পুনরায় ফিরে আসার পথও রুদ্ধ হবে। এ ছাড়া লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিও আমরা তুলে ধরেছি। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
ইফতার মাহফিলে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, ইরানের রাষ্ট্রদূত, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক, পাকিস্তানের হাইকমিশনার, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত যোগ দেন। এ ছাড়া মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ভারত, ভুটান, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া, ইরাক, ভ্যাটিকান সিটি, কানাডা, ব্রাজিল, আলজেরিয়া, কসোভো, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি, আইআরআই ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক অংশ নেন।