ম্যাচটা ছিল ভারত–বাংলাদেশের। অথচ সংবাদ সম্মেলনে বারবার কেবল ঘুরেফিরে এলেন নাহিদ রানা। এই পেসারকে ঘিরে ভারতীয় সাংবাদিকদের কৌতূহলের যেন শেষ ছিল না। শুধু কি সাংবাদিক, অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারের কথাতেও ঘুরেফিরে আসছিলেন বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার।
পরদিন ভারতের বিপক্ষে নাহিদ রানা খেলেনইনি, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। বলার কথা হলো, এসব আলোচনা নাকি নাহিদ রানাকে স্পর্শই করে না। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে দেশে ফিরেই চলে গিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজের বাড়িতে। ফিরেছেন গতকাল বিকেলে।
নাহিদ রানার নিজের কাছে জীবনের মন্ত্রটা খুব সহজ—ক্রিকেটের পেশাদার দুনিয়ায় উইকেট–কন্ডিশন এসবকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজে তাই কোনো অজুহাত দিতে চান না।
সন্ধ্যায় জিমে যাওয়ার আগে নাহিদ রানা মুখোমুখি হয়েছিলেন । চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তাঁকে ঘিরে এত আলোচনা নিয়ে নিরুত্তাপ থাকার কথাটা বলেছেন তখনই। একসময় এসব নিয়ে আগ্রহ ছিল, এখন যেটিকে স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে হয় তাঁর কাছে। কথা বলেছেন নিজের বোলিংয়ের শক্তির জায়গা, তাঁকে ঘিরে থাকা চোটের শঙ্কা, কীভাবে নিজের চাপটা সামলে নেন এসব নিয়েও।
প্রায় নিয়মিত ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করেন, কখনো কখনো ছুঁয়ে ফেলেন ১৫০ কিলোমিটারও। ব্যাটসম্যানদের জন্য যা খেলা খুব কঠিন। কিন্তু নাহিদ রানার নিজের কাছে জীবনের মন্ত্রটা খুব সহজ—ক্রিকেটের পেশাদার দুনিয়ায় উইকেট–কন্ডিশন এসবকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজে তাই কোনো অজুহাত দিতে চান না। কারণ বিশ্বাস করেন, এটা না দেওয়াটা অভ্যাস করে ফেললে একদিন না একদিন সফল হওয়া যাবেই।
তাঁদের খেলা দেখে বড় হয়েছি ছোটবেলায়। এখন তাদের সঙ্গে খেলছি। যখন আমার কোনো কিছু ঘাটতি মনে হয়, অথবা তাদেরও যদি এমন কিছু মনে হয়—তাঁরা এসে বলে। আমি যদি কোনো কাজ করি, তাঁদের দেখতে বলি। সাহায্য লাগলে কোনো দ্বিধা ছাড়া চলে যাই।
নাহিদ রানা, বাংলাদেশের পেসার
নাহিদের সঙ্গে জাতীয় দলে এখন একঝাঁক পেসার। তাঁদের নিয়ে দুনিয়াজুড়েই আলোচনা। তাসকিন আহমেদ–মোস্তাফিজুর রহমানদের খেলা টিভিতে দেখে বেড়ে ওঠা নাহিদ মাঝেমধ্যে সাহায্য চান তাঁদের কাছেও, ‘তাঁদের খেলা দেখে বড় হয়েছি ছোটবেলায়। এখন তাদের সঙ্গে খেলছি। যখন আমার কোনো কিছু ঘাটতি মনে হয়, অথবা তাদেরও যদি এমন কিছু মনে হয়—তাঁরা এসে বলে। আমি যদি কোনো কাজ করি, তাঁদের দেখতে বলি। সাহায্য লাগলে কোনো দ্বিধা ছাড়া চলে যাই।’
এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়া। কোনো ক্রিকেটার একটু ভালো করলেই চোখ পড়ে তাঁর দিকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবশ্য খুব বেশি সুযোগ মেলে না, পেলেও দেওয়া হয় না অনুমতি। এ ক্ষেত্রেও ভাবনাটা পরিষ্কার নাহিদের, ‘আমার নজর শুধু জাতীয় দলে। বিসিবি যদি অনুমতি দেয়, তাহলে যাব। না হলেও এটা নিয়ে সমস্যা নেই।’