দ্যা নিউ ভিশন

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১৬:০৯

আপেল খোসাসহ খাবেন, নাকি খোসা ছাড়া, কোনটা কার জন্য ভালো

খোসার সঙ্গে যেমন এর পুষ্টির সম্পর্ক আছে, তেমনি আছে খাদ্যনিরাপত্তার প্রশ্নও

কেউ আপেল খান খোসাসহ, কেউ খান খোসা ছাড়িয়ে। আদতে কীভাবে আপেল খাওয়া সবচেয়ে ভালো, তা কখনো ভেবে দেখেছেন কি? আপেল দারুণ পুষ্টিকর। সুস্বাদু ফল হিসেবে জনপ্রিয়ও বটে। খোসার সঙ্গে যেমন এর পুষ্টির সম্পর্ক আছে, তেমনি আছে খাদ্যনিরাপত্তার প্রশ্নও।

আপেলের খোসায় থাকে প্রচুর আঁশ। এ আঁশের কারণেই আপেলের খোসা কারও জন্য ভালো, আবার কারও জন্য ভালো নয়। আর আপেলের খোসা যদি আপনার জন্য ভালো হয়ে থাকে, তাহলেও তা নিরাপদে গ্রহণ করার উপায় জানা না থাকলে কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এ প্রসঙ্গে জানালেন রাজধানীর গবর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফাতেমা আকতার।

আপেলের খোসা কেন ভালো

আপেলের খোসায় যে আঁশ আছে, তা আমাদের দেহের জন্য উপকারী। আঁশ হজম হতে সময় বেশি লাগে। তাই আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেলে সহজে ক্ষুধা পায় না, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। রক্তের সুগার বা শর্করার মাত্রাও থাকে নিয়ন্ত্রণে। রোজ পর্যাপ্ত আঁশ গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকা সহজ। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আঁশ আমাদের রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই আঁশসমৃদ্ধ যেকোনো খাবারই রোজ খাওয়া উচিত। এতে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমে।

আপেলের খোসা কেন খারাপ

আপেলের খোসার ভালো দিক সম্পর্কে তো জানলেন। আপেলের খোসা কেন কখনো কখনো ক্ষতিকর হতে পারে, সেটিও জেনে নিন। কারও কারও হজমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে আঁশের কারণে। পেটে অস্বস্তি হতে পারে। অ্যাসিডিটিতে ভুগতে পারেন তিনি। আবার আপেলের খোসা সঠিকভাবে ধোয়া না হলে কিন্তু তাতে কীটনাশক কিংবা ধুলাময়লাও লেগে থাকতে পারে। ময়লা লেগে থাকা আপেল খেলে পেটের পীড়ার আশঙ্কা থাকে। আর খোসার মাধ্যমে যদি কীটনাশক আপনার দেহে প্রবেশ করে, তাহলে তা থেকে নানাবিধ ক্ষতিই হতে পারে আপনার।

তাহলে কী করবেন

আঁশের কারণে হজমে ব্যাঘাত ঘটলে খোসা ছাড়া আপেলই খেতে হবে আপনাকে। তবে এমন সমস্যা না থাকলে খোসাসহ আপেল খাওয়াই আপনার জন্য ভালো। আপেলের খোসায় বাইরের ধুলাময়লা কিংবা কীটনাশক লেগে থাকার ভয়ে কেন আপনি এ দারুণ পুষ্টি উপাদানটি ফেলে দেবেন, বলুন? মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এসব পদার্থ দূর করতে গোটা আপেলটি খাওয়া বা কাটার আগে ভালোভাবে ঘষে ধুয়ে ফেলাই যথেষ্ট। আপেল ধোয়ার জন্য কলের পানির পরিবর্তে বিশুদ্ধ পানি, অর্থাৎ খাওয়ার পানি ব্যবহার করা উচিত। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে খাওয়ার পানিতে মিনিট পনেরোর জন্য গোটা আপেলটি ডুবিয়ে রাখতে পারেন। চাইলে এ কাজের জন্য খাওয়ার পানি কুসুম গরম অবস্থাতেও নিতে পারেন। বিশুদ্ধ পানিতে ভালোভাবে ধুলেই আপেলের খোসায় লেগে থাকা অস্বাস্থ্যকর উপাদান চলে যায়। তবে চাইলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার বিশুদ্ধ পানিতে সামান্য ভিনেগার বা লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে পারেন গোটা আপেল। কিংবা একইভাবে পানিতে কেবল সামান্য খাবার সোডা মিশিয়েও আপেল ভিজিয়ে রাখা যায়। দুই ক্ষেত্রেই ১০ মিনিট পর আবার বিশুদ্ধ পানি দিয়ে আপেল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। আর আপেল ধোয়ার আগে নিজের দুই হাত অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।

একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন, কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব, আপেল খেয়ে নিতে হবে। কাটা ফল রেখে দিলে পুষ্টিগুণ কমে যেতে থাকে। তাই কাটার পর সর্বোচ্চ দু-তিন ঘণ্টার মধ্যেই আপেল খেয়ে ফেলুন।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ